দস্যু বাহিনীদের  উদ্দেশ্যে পুলিশ সুপার 

সুন্দরবনে দস্যুতা ছেড়ে ভাল পথে আসলে চাকরীর আশ্বাস

মাসুদ রানা, মোংলা 

আপডেট : ১১:০৬ পিএম, শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ | ৩৬১

সুন্দরবনের দস্যুতা ছেড়ে ভাল পথে ফিরে আসলে তাদের জন্য বেসরকারী বা সরকারের নিয়মানুযায়ী চাকুরীর ব্যবস্থা করা হবে। আর যদি কেউ জীবনে দস্যুতার পথই ভাল মনে করে তবে তাদের জীবনে কি হবে তা সরকারের নির্ধারণ করা আছে বলে হুশিয়ারী দেন জেলা পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক। শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় দ্বিগরাজ বাজার মাঠে আত্নসমর্পনকৃত বন দস্যু, জেলে মহাজন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে আইনশৃংখলা ও জীব বৈচিত্র সংরক্ষণে জরুরী মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।


দীর্ঘ ৫ বছর পর নতুন করে সুন্দরবনে দস্যু আতংঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বেগ উৎকন্ঠা ছড়িয়ে পরে জেলে পরিবারের মাঝে। পাশাপাশী দস্যু বাহিনীর সকল সদস্যরা এখন পর্যন্ত গ্রেফতার না হওয়ায় চিহ্নিত প্রশাসনও। এ নিয়ে বাগেরহাটের জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যম বাগেরহাট টুয়েন্টিফোর ডট কম সহ বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রচার হওয়ায় নড়েচরে বসে র‌্যাব, কোস্টগার্ড ও পুলিশ সহ সকল প্রশাসন সদস্যরা।

শনিবার সকাল সাড়ে ১১ টায় দ্বিগরাজ বাজার মাঠে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে মোংলা থানা পুলিশ। মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মাদ মনিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আসাদুজ্জামান, মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিপংকর দাশ, উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার, পৌর মেয়র শেখ আঃ রহমান, বুড়িরডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান উদয় শংকর বিশ্বাস, সুন্দরবন ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ইকরাম ইজারাদার সহ অনেকে।

এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আসিফ ইকবাল, সোনাইলতলা ইউপি চেয়ারম্যান নারজিনা আক্তার নাজিনা, মোঃ ইস্রাফিল হাওলাদার, রামপাল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ সামসুদ্দিন সহ ইতি পুর্বে সুন্দরবন থেকে আত্মসমর্পণকৃত বনদস্যু, জেলে, বাওয়ালী,মৌয়ালী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সকল বনজীবীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেন, ২০১৮ সালের পহেলা নভেম্বর সরকারের পক্ষ থেকে সুন্দরবন দস্যু মুক্ত ঘোষনা করার পর ভালভাবেই বন থেকে জীবিকা নির্বাহ করতে ছিল জেলেরা। কিন্ত সম্প্রতি নতুন করে আবারও দস্যু আতঙ্ক শুরু হওয়ায় অনেক জেলে সুন্দরবনে যাওয়া ছেড়ে দিয়েছে। এছাড়া পুর্বের আত্নসমর্পকৃত বন দস্যুদের অনেকেই নতুন এ বাহিনীর সাথে সখ্যতা রয়েছে বলেও গোপন তথ্য রয়েছে প্রশাসনের কাছে। তাই জরুরী মতবিনিময় সভায় দস্যুতার পথ ছেড়ে আবারও ভাল পথে ফিড়ে আসার আহবান পুলিশের পক্ষ থেকে। এছাড়া নৌ-পুলিশ ও সুন্দরবনের বন বিভাগের স্মার্ট পেট্রলিং টিম ও কিছু অসাধু বন বিভাগের সদস্যদের বিরুদ্ধে জেলেদের কাছ থেকে অবৈধ ভাবে জোর পুর্বক টাকা নেয়াসহ জেলে ও বনজীবীদের হয়রানি করেন বলে অভিযোগ করেন অনেকেই।

এসময় পুলিশ সুপার আত্নসমর্পনকৃত বন দস্যুদের পুনরায় উদ্দেশ্য করে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দস্যু মুক্ত সুন্দরবন ঘোষনাকে অমান্য করা মানে তার নির্দেশনাকে অমান্য করার সামিল। তাই যদি কেউ নতুন করে বন দস্যুদের সাথে হাত মিলিয়ে থাকে তবে তাদের ভাল হওয়ার এখনও সুযোগ রয়েছে। সময় থাকতে এ পথ ছেড়ে দিয়ে ভাল পথে আসলে তাদের জন্য চাকরী সহ ভাল থাকার সু-ব্যাবস্থা রয়েছে। যারা বর্তমানে সুন্দরবনে দস্যুতা করে জেলেদের মাঝে ত্রাশ সৃস্টি করছে, তার মধ্য থেকে ৩জনকে অস্ত্র সহ আটকও করা হয়েছে। বাকিরাও প্রশাসনের বিশেষ নজরদারিতে রয়েছে বলেও জানান তিনি। সভা শেষে জেলে ও আত্নসমর্পনকৃত বন দস্যুদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত