ভারতীয় কোস্টগার্ডকে বার্তা সমুদ্রে ভিনদেশী জেলেদের আগ্রাসন বন্ধে 

মোংলা প্রতিনিধি

আপডেট : ০৯:১৫ পিএম, সোমবার, ১০ অক্টোবর ২০২২ | ৩২৭

মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২২ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন বাংলাদেশী জলসীমায় ভারতীয় জেলেদের আগ্রাসন ও অপতৎপরতা বন্ধ করতে টহল বৃদ্ধি করেছে কোস্টগার্ড। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ-ভারত জলসীমায় ভারতীয় জেলেদের আগ্রসন ও অবৈধ ভাবে মাছ শিকার রোধ করতে সেদেশের কোস্টগার্ডকে বার্তা দিয়েছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড।


মোংলা ও সুন্দরবন সংলগ্ন অঞ্চলের জেলেরা বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, বাংলাদেশে যখন ইলিশ শিকারের নিষেধাজ্ঞা চলে তখন দেশীয় জলসীমায় ভিতরে ভারতীয় জেলেরা প্রবেশ করে ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরে নিয়ে যায় ভারতীয় জেলেরা। জলসীমায় ১২ মাস ধরেই চলে ভারতীয় জেলেদের আগ্রাসন। তাদের এ অবৈধ মাছ শিকার রুখে দিতে সমুদ্রে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের টহল বৃদ্ধির আহ্বান জানান জেলেরা।


মোংলা উপজেলা জাতীয় মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি বিদ্যুৎ মন্ডল বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, নিষিদ্ধ সময়ে সাগরে বাংলাদেশের জলসীমায় চলে ভিনদেশি জেলেদের আনাগোনা। এছাড়া ভারতীয় সিমানায় ইলিশ কম একং লবনাক্ততা বেশী থাকায় মাছও ভাল ফলন হয়না। বাংলাদেশী সিমানায় গভিরতা থাকায় মিস্টি পানি এবং মাছের ফলনও প্রচুর তাই ওই দেশী জেলেরা বাংলাদেশের সিমানায় প্রবেশ করে সমুদ্রের গভিরে গিয়ে মাছ শিকার করে নিয়ে যায়। এ জন্য পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞার সময়কাল ঠিক করা উচিত।

মোংলার কানাইনগর জেলে সমিতির সাধারন সম্পাদক আব্দুর রশিদ বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, নদী-সাগরে মৎস্য সম্পদ বাড়াতে বাংলাদেশের জলসীমায় ভিনদেশি জেলেদের অনুপ্রবেশ বন্ধ করার কোন বিকল্প নাই। ভারতীয় জেলেরা এই নিষেধাজ্ঞার সময় বুঝে আমাদের দেশে মাছ শিকার করে নিয়ে যান। মাঝে মধ্যে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের হাতে কিছু সংক্ষক জেলে আটক হলেও পরে তারা জামিনে বেরিয়ে আবার একই কাজে নেমে পড়েন। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তব্যরত ব্যক্তিদের আরও কঠোর হতে হওয়ারও আহবান জানায় এ মৎস্য সমিতির নেতা।

মোংলা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে সমুদ্রে মাছ আহরণ বন্ধের সময় নির্ধারণণের দায়িত্ব মৎস্য গবেষণা অধিদফতরের। আর বাংলাদেশে আটক ভিনদেশি জেলেদের সাজা ও জরিমানা বাড়ানোর কার্যক্রম চলছে।


কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন মোংলার স্টাফ অফিসার (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মহিউদ্দিন জামান জানান, বাংলাদেশে ইলিশ ধরা নিষেধাজ্ঞার সময়ে ভিনদেশি জেলেরা অবৈধভাবে জলসীমায় ঢুকে মাছ শিকারে আসে এটা সত্য। কিন্তু তার সংখ্যা খুবই কম। তাদের ঠেকাতে কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের ১২টি স্টেশন ও আউটপোস্টের সদস্যরা তৎপর রয়েছেন। এছাড়া বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে নিরাপদ সমুদ্রসীমা নিশ্চিত করতে কোস্টগার্ডের ইনশোর পেট্রোল ভ্যাসেলসহ বিভিন্ন জাহাজ টহলে থাকে। তিনি আরো বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময়ে কোনো ভিনদেশি জেলে যাতে ঢুকতে না পারে, সে ব্যাপারে ভারতের কোস্টগার্ডের নর্থ ইস্ট রিজিয়ানের কমান্ডেন্ট বিবেক শর্মার সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) বার্তার মাধ্যমে আলোচনা হয়েছে। বিবেক শর্মাকে নিষেধাজ্ঞার সরকারি প্রজ্ঞাপন এবং কিছু লিফলেট পাঠানো হয়েছে। তাকে বলা হয়েছে, এই সময়ে ভারতীয় কোনো জেলে বাংলাদেশের জলসীমায় যেন প্রবেশ না করে। এজন্য যেন তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন এবং যদি তা না করেন তাহলে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড কঠোর ভারতীয় জেলেদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে বলে আশ্বাস্ত করেণ কোস্টগার্ডের এ কর্মকর্তা।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত