পিরোজপুরে প্রখর রোদে মাঠে দাঁড় করিয়ে ১২০০ জনের বেশি শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়ার অভিযোগ : অসুস্থ্য ১

পিরোজপুর প্রতিনিধি 

আপডেট : ০৮:১৩ পিএম, বৃহস্পতিবার, ৬ জানুয়ারী ২০২২ | ৪১৭

পিরোজপুর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে দিনব্যাপী প্রখর রোদে রেখে টিকা দেয়ায় অনেকে বিভিন্ন ভাবে সমস্যায় পড়লেও খুলে দেয়া হয়নি কক্ষ বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের প্রখর রোদে দাঁড় করিয়ে ফাইজারের করোনা টিকা দেয়া হলে লামিয়া নামে এক শিক্ষার্থী অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। এছাড়াও সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে অনেক শিক্ষার্থী বিভিন্ন সমস্যায় পড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন অভিভাবকরা।



জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের মতে, ১৫ ডিসেম্বর থেকে পিরোজপুর জেলার সদর উপজেলা, মঠবাড়িয়া, ইন্দুরকানী ও ভান্ডারিয়াতে ১৪ হাজার ১৫৭ জন শিক্ষার্থীকে ফাইজারের করোনা টিকা প্রদান করা হয়েছে। এদের মধ্যে সদর উপজেলায় ৮ হাজার ৩৯৮ জনকে, ইন্দুরকানীতে ২ হাজার ৫৫৫ জনকে, মঠবাড়িয়ায় ২ হাজার ৬৯৪ জনকে এবং ভান্ডারিয়ায় ৫১০ জনকে ফাইজারের টিকা দেয়া হয়েছে।


স্কুলের শিক্ষার্থীদের আগে ফাইজারের করোনা টিকা দেয়া শেষ হলেও আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সদর উপজেলার সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজ, আফতাবউদ্দিন কলেজ এবং তেজদাসকাঠী কলেজের শিক্ষার্থীদের একসাথে টিকা দেয়ার দিন ধার্য করা হয়। এতে সকাল থেকেই করোনার টিকা দেয়ায় পিরোজপুর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে মাঠে ভিড় জমাতে থাকে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। সময়ের সাথে সাথে রোদের তীব্রতা বাড়লে অনেক শিক্ষার্থীরা সাময়িক অসুস্থ্য বোধ করে। অভিভাবকরা বাহির থেকে পানির ব্যবস্থা করলেও বসতে দেয়া হয়নি বিদ্যালয়ের কোন কক্ষে, ফলে অনেকেই অভিযোগ করেছেন প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।



এ বিষয়ে অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন, দেখে মনে হয় ভোট গ্রহণ চলছে। দিনব্যাপী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের এনে টানা প্রখর রোদে দাঁড়িয়ে থেকে টিকা নিতে হচ্ছে। কয়েকজন অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে, তারমধ্যে একজন গুরুতর অসুস্থ্য হয়েছে। বার বার ছায়াযুক্ত কোন স্থান খুজলেও পিরোজপুর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের কোন রুম পাওয়া যায়নি। টিকার মেয়াদ শেষ হচ্ছে এজন্যই তড়িগরি করে আমাদের টিকা দেয়া হচ্ছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আচরণ অত্যান্ত দুঃখজনক।


পিরোজপুর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন মাঝি বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে বলেন, কর্তৃপক্ষ এখানে কেনো টিকার আয়োজন করলেন? সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজে কি জায়গার অভাব? আমার কাছে কেউ কোন অভিযোগ করেনি। আমার বিদ্যালয়ে কিভাবে জায়গা দিবো সকাল থেকে ক্লাস চলছে ক্লাস রেখে জায়গা দিবো কিভাবে।



সিভিল সার্জন হাসনাত ইউসুফ জাকী বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে জানান, প্রথম ডোজ ফাইজারের করোনা টিকা আমরা ১৮ হাজার ৭২০ ডোজ পেলেও ইতিমধ্যে ১৪ হাজার ১৫৭ ডোজ দেয়া হয়েছে। যেহেতু ফাইজারের টিকা ঢাকা থেকে আনার ১ মাসের মধ্যে দিতে হবে তাই একটু তড়িৎ গতিতেই দেয়া হচ্ছে। একসাথে কয়েকটি কলেজ একত্রিত হয়েছে বলে সমস্যা হয়েছে। তবে এটা নির্ধারিত স্থান বিদ্যালয় কেন্দ্র ও শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিষয়।


পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে বলেন, বিষয়টি অত্যান্ত দুঃখজনক, উচিৎ ছিলো বিদ্যালয়ে টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থীদের নিরাপদ জায়গার ব্যবস্থা করে দেয়া। তবে পরবর্তীতে এমনটি আর কখনো হবে না কারন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের নির্দেশ দেয়া হবে তারা যেনো একই দিনে এমন টিকা কার্যক্রম না রাখে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত