স্বাধীনতার ৫০ বছরেও রামপালের ডাকরার শহীদদের হয়নি কোন তালিকা

এম,এ সবুর রানা, রামপাল

আপডেট : ০৮:০১ পিএম, বুধবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২১ | ৪৪৪

১৬ ই ডিসেম্বর। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসব পালন করা হচ্ছে। এই উপলক্ষে সরকারি, বেসরকারি ও রাজনৈতিকভাবে ঘটা করে বিজয় দিবস পালন করছি আমরা। ১৯৭১ সালের ২১ মে শুক্রবার বেলা ২ টার দিকে উপজেলার ডাকরা গ্রামে হানাদার বাহিনীর দোসরদের হাতে নির্মমভাবে নিহত হন প্রায় ৬ শতাধীক নারী, পুরুষ ও শিশু। ওইসব হতভাগ্যরা জীবন বাঁচতে দেশ ছেড়ে ভারতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এদের করো বাড়ী বেতকাটা, কাটাখালী, খাঁনপুর, সায়ড়া, বাগেরহাট, মোড়েলগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায়। ওই হতভাগ্যদের মধ্যে ১০৪ জনের নাম ও ঠিকানা পাওয়া গেলেও বাকিদের স্বাধীনতার পরবর্তী ৫০ বছরের মধ্যে সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। যা জাতির জন্য বড় লজ্জার।


সাবেক শিক্ষক শিশির কুমার বিশ্বাস আক্ষেপ করে বলেন, রাষ্ট্রিয় ব্যবস্থাপনায় কেউ উদ্যোগ নেয়নি বা স্থাণীয়ভাবে তথ্যানুসন্ধান না করায় সবাইকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। স্থাণীয় রাজাকার, আলবদর ও তার দোসররা দুইটি নৌকা করে ডাকরা কালিবাড়ী মন্দিরে জড়ো হয়ে থাকা মানুষদের দুই দিন দিয়ে ঘিরে ফেলে। একটি নৌকায় ছিল ২৫ থেকে ২৬ জন ও অপর নৌকায় ছিল ১২/১৫ জন রাজাকার। তারা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে আক্রমন করে নির্বিচারে পাখিরমত গুলি করে হত্যা করে।


২১ মে শুক্রবার বেলা ২ টা থেকে ৬ টা পর্যন্ত চলে এ নারকীয় হত্যাযজ্ঞ। জানা যায়, পালিয়ে যাওয়ার জন্য দুইদিন পূর্ব থেকে ডাকরার কালীবাড়ীর তাত্মিক নোয়া ঠাকুরের বাড়ীতে অবস্থান নেয়। তারা ১৫ থেকে ১৬টি নৌকার করে ভারতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। বাগেরহাটের কুখ্যাত রজ্জব আলী রাজাকার, ডাকরা গ্রামের লিয়াকত গজনবী ও তার ভাই আলতাফ গজনবী এবং বাঁশতলী গ্রামের খোরশেদ মুক্তারের পুত্র রাজাকার ছোটসহ অজ্ঞাতরা এ হত্যাযজ্ঞে অংশ নেয়। পার্শবর্তী বাঁশতলী গ্রামের আরও কিছু ব্যক্তি ও্ হত্যাযজ্ঞে অংশগ্রহণ করে। কিন্তু তার কোন নির্ভরযোগ্য ভিত্তি খুজে পাওয়া যায়নি।


ক্ষোভ প্রকাশ করে বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফুল্ল চন্দ্র রায় (পিসি রায়) ও বীরমুক্তিযোদ্ধা বনমালী ডাকুয়া বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি ডাকরা গ্রামের নিমু রায়ের অধীনে,তার নেতৃত্বে। কিন্তু বিষ্ময়কর ও দুঃখজনক ঘটনা হলো কোথাও ওই বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের কোন তালিকায় নাম নেই। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত অবমানকর। আমাদের দাবি ডাকরায় নিহত সকল শহীদদের তালিকাসহ কমান্ডার নিমু রায়কে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ও তার মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া হোক।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত