জেলায় ৬৭ জন ওএমএস ডিলার

বাগেরহাটের তিন উপজেলায় ওএমএস কার্যক্রম শুরু

স্টাফ রিপোর্টার

আপডেট : ০৪:১৮ পিএম, বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | ৯৬৬

ওএমএস চাল বিতরন

বুধবার থেকে সারা দেশে ৪৯১ টি উপজেলায় ওএমএস কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা থাকলেও। দেশের বিভিন্ন উপজেলায় এখনও শুরু হয়নি ওএমএস কার্যক্রম। শুরু না হওয়ার তালিকায় রয়েছে বাগেরহাটের ৬টি উপজেলা। কার্যক্রম শুরু হয়েছে মাত্র ৩টি উপজেলায়। বাকি উপজেলা গুলোতে এখন পর্যন্ত ওএমএস কার্যক্রম চালু করতে পারেনি খাদ্য বিভাগ। এদিকে ওএমএসে আতপ চাল দেয়ায় চাল উত্তোলনে আগ্রহ কম ডিলার ও ক্রেতাদের।

এ অঞ্চলের মানুষ যুগ যুগ ধরে সিদ্ধ চালের ভাত খেয়ে আসছে’। একারনে হঠাৎ করে আতপ চাল এ অঞ্চলের খেটে খাওয়া সাধারন মানুষ কতটা গ্রহন করবে তা নিয়ে ডিলারদের মধ্যে কিছুটা সংশয় রয়েছে দাবী খাদ্য বিভাগের ।

সরকারের এ কার্যক্রম যথাযথ ভাবে বাস্তবায়ন করতে সর্বোচ্চ সর্তকতা অবলম্বন করে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ৯টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসক সভাপতি, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সদস্য সচিব,জেলা কৃষি কর্মকর্তা, পৌরসভার প্রতিনিধি, জেলা প্রাথমিক কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসকের মনোনিত স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিদের মধ্যে থেকে দুইজনকে নিয়ে জেলা কমিটি।

উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সভাপতি, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সদস্য সচিব, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, উপজেলা প্রাথমিক কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান,ও জেলা প্রশাসকের মনোনীত স্থানীয় দুইজন গন্য মান্য ব্যাক্তি এই কমিটির সদস্য থাকবেন।

জেলার মোট ০৯টি উপজেলার মধ্যে জেলা সদরের পৌরসভা এলাকা, কচুয়া ও রামপাল উপজেলায় শুরু হয়েছে ওএমএস কার্যক্রম। এদিকে মোড়েলগঞ্জ, শরণখোলা, মোংলা, ফকিরহাট, মোল্লাহাট, চিতলমারি উপজেলাতে এখনও শুরু হয়নি ওএমএস কার্যক্রম। সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুসারে এসব উপজেলায় এখনও ডিলার নির্বাচন করতে পারেনি খাদ্য বিভাগ। প্রত্যেক উপজেলায় নিবন্ধিত ওএমএস ডিলার থাকলেও সাধারন মানুষ আতপ চাল কিনতে কতটা আগ্রহী হবে সেই লাভ ক্ষতির হিসাব কষতে ডিলারদের কেউ কেউ নগদ টাকা দিয়ে চাল উত্তোলনে আগ্রহী না হওয়ায় ডিলার নির্বাচন নিশ্চিত করতে দেরী হচ্ছে বলে দাবী জেলা খাদ্য বিভাগের।

খাদ্য বিভাগের তথ্য অনুসারে জেলায় ৬৭ জন ওএমএস ডিলার রয়েছেন। এর মধ্যে বাগেরহাট পৌরসভায় ৯,সদর উপজেলায় ৪, কচুয়ায় ৭, চিতলমারিতে ৯, মোল্লাহাটে ৪, ফকিরহাটে ১২, রামপালে ৫,মোংলায় ৪জন ডিলার থাকলেও ১৬টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত জেলার সবথেকে বড় উপজেলা
মোড়েলগঞ্জে কোন ওএমএস ডিলার নিয়োগ হয়নি এখনও।

জেলা খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানাযায়, দেশে চলমান খাদ্য সংকট নিরসনে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী জেলা সদরের পৌরসভায় পাঁচ জন ও প্রত্যেক উপজেলায় তিনজন ডিলারের মাধ্যমে ওএমএস কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। প্রত্যেক ডিলার প্রতিদিন এক মেট্রিকটন চাল পাবেন। আর এ চাল যাতে ভোক্তারা সঠিকভাবে পায় সে জন্য জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে প্রধান করে একটি মনিটরিং সেল গঠন করেছে খাদ্য বিভাগ।

এছাড়া বাগেরহাট জেলায় কোন খাদ্য সংকট নেই বলে দাবী করেছেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক। জেলার নয় উপজেলায় ২৭টি খাদ্য গুদামের ধারণ ক্ষমতা পনের হাজার মেট্রিক টন। বর্তমানে মজুদ আছে ৩০৬৫ মেট্রিক টন। এর মধ্যে চাল ২৯৩১ মেট্রিক টন ও গম রয়েছে ১৩৪ মেট্রিক টন। সদর উপজেলার ৭টি গুদামে ১হাজার ৩শ১৯ মেট্রিক টন চাল ও ৭৩ মেট্রিক টন গম, মোড়েলগঞ্জে ২টি গুদামে ৫শ১১ মেট্রিক টন চাল ও ১৪ মেট্রিক টন গম, শরণখোলায় ২টি গুদামে ৮৬ মেট্রিক টন চাল
ও ২ মেট্রিক টন গম, ফকিরহাটে ২শ২৭ মেট্রিক টন চাল ও ৩ মেট্রিক টন গম, মোল্লাহাটে ২০ মেট্রিক টন চাল ও ১ মেট্রিক টন গম, কচুয়ায় ১শ১৩ মেট্রিক টন চাল, মোংলায় ৩শ৪২ মেট্রিক টন চাল ও ৪১ মেট্রিক টন গম, রামপালে ২শ৭৩ মেট্রিক টন চাল মজুদ আছে। আর জেলার একমাত্র উপজেলা চিতলমারী যেখানে কোন খাদ্য গুদাম নাই।

ওএমএস চাল বিতরনের বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক একেএম শহীদুল হক বলেন, জেলায় কোন খাদ্য সংকট নেই । জেলার ৯টি উপজেলার ৮টিতে ডিলার নিয়োগ চুড়ান্ত করা হয়েছে।বাকিটিতে দুই একদিনের মধ্যে চুড়ান্ত হবে। সেই সাথে সরকারের বেঁধে দেয়া দামে সাধারন মানুষ নির্ধারিত ডিলারদের কাছ থেকে সংগ্রহ করতে পারবে চাল । তবে আটার ব্যাপারে সরকারি কোন নির্দেশনা পাননি বলে জানান এই কর্মকর্তা।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত