১ সেপ্টেম্বর খুলছে সুন্দরবনে পর্যটনের দ্বার 

মহিদুল ইসলাম, শরণখোলা

আপডেট : ০৮:৩৫ পিএম, সোমবার, ৩০ আগস্ট ২০২১ | ৮৯৩

দীর্ঘ ১৭ মাস (প্রায় দেড় বছর) পর পর্যটনের দ্বার খুলছে সুন্দরবনে। পহেলা সেপ্টেম্বর থেকেই বনের ট্যুরিস্ট স্পটগুলোতে প্রবেশ করতে পারবেন দর্শনার্থীরা। রবিবার (২৯আগস্ট) বন বিভাগের এক সভায় নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এই সিদ্ধান্তের পর থেকে ট্যুরিস্ট কম্পানিগুলো নতুন আঙ্গীকে কাজ শুরু করেছে।


ওইদিন বিকেলে সাড়ে তিনটার দিকে পশ্চিম বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা সার্কেলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো। এই সভায় বনবিভাগের কর্মকর্তা ও খুলনার ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


এদিকে, নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এবং নিজস্ব গ্রুপে নানা অফার সংযুক্ত করে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে ট্যুর অপারেটরগুলো। ভ্রমণ পিপাসুরাও দীর্ঘদিনের বন্দিদশা থেকে একটু প্রশান্তির আশায় ট্যুর অপারেটরদের সঙ্গে অগ্রিম যোগাযোগ ও বুকিং দিতে শুরু করেছেন বলে জানা গেছে।


বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারীর কারণে গত বছরের ২৫ মার্চ থেকে সুন্দরবনে পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বনবিভাগ। এছাড়া, সুন্দরবনের মাছের প্রজনন মৌসুম শুরু হওয়ায় এবছরের ২৪জুন থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত জেলেদেরও বনে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। নিষেধাজ্ঞা থাকায় ট্যুর অপারেটর এবং এর সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রায় দুই হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী চরমভাবে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। পাশাপাাশ দুর্ভোগে পড়ে বনের ওপর নির্ভরশীল পেশাজীবীরাও।


খুলনার মেহেদী ট্যুরিজমের মালিক মো. শাহেদী ইসলাম রকি বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে জানান, ট্যুরিজম ব্যবসা বন্ধ হওয়ার পর এই দেড় বছরে তার সবমিলিয়ে প্রায় ২০লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। দীর্ঘদিন অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকায় ট্যুরিস্ট ভ্যাসেলটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন নতুন করে সবকিছু করতে হচ্ছে।


এই ট্যুর অপারেটর আরো জানান, নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর ইতোমধ্যে তার একটি বুকিং হয়েছে। ২সেপ্টেম্বর ২২জন ট্যুরিস্ট নিয়ে তিন দিনের জন্য যাত্রা শুরু করবেন। পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের কটকা, কচিখালী এবং চাঁদপাই রেঞ্জের হারাবড়িয়া ও করমজল ভ্রমণ করবে তার পর্যটকরা।


খুলনার ট্যুর অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. নামজমুল আযম ডেভিড বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে জানান, বনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকায় ট্যুর কম্পানিগুলোর অনেক ক্ষতি হয়েছে। এই শিল্পের ওপর নির্ভরশীল প্রায় দুই হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এই সময়টাতে চরম দুর্দিন গেছে। নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় এখন কিছুটা হলেও ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।


সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে জানান, ১সেপ্টেম্বর থেকে সুন্দরবনে পর্যটক প্রবেশে অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। রবিবারের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একটি লঞ্চে সর্বোচ্চ ৭৫জনের বেশি ট্যুরিস্ট পরিবহন করা যাবে না। বনবিভাগের বিধিনিষেধ মেনেই চলতে হবে তাদের।


ডিএফও জানান, পর্যটকরা সুন্দরবনের কটকা, কচিখালী, দুবলা, করমজল, নীলকমল, হারবাড়িয়া, হিরণ পয়েন্টসহ সমুদ্রতীরবর্তী বনের দর্শনীয় স্থানগুলোতে লঞ্চ, ট্যুরবোট, ট্রলারে করে ভ্রমণ করতে পারবেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত