মোংলা বন্দরের তিন নিরাপত্তা কর্মকর্তা লাঞ্চিত

মোংলা বন্দরের জমি দখলে বাঁধা দিতে গিয়ে মোংলা বন্দরের তিন নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে মারধর ও লাঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার দুপুরের দিকে একদল সন্ত্রাসী মোংলা বন্দরের শিল্পাঞ্চল সরকার মার্কেট ব্রিজ সংলগ্ন বন্দর কর্তৃপক্ষের জায়গা দখল করতে গেলে এতে বাধা দেয় বন্দরের নিরাপত্তা হাবিলদার ইব্রাহিম হোসেন, আসাদুজ্জামান আসাদ ও নুরুল আমিন সহ ৪ জনকে মারধর ও লাঞ্চিত করে ঐ এলাকার প্রভাবশালী প্রানেশ সরকার, শহিদুল ও কালামসহ এক দল সন্ত্রাসী। এসময় মোংলা থানা পুলিশের সহায়তায় তাদের উদ্ধারসহ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে। এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও বন্দরের নিরাপত্তা শাখা থেকে জানা যায়, মোংলা বন্দরের শিল্পাঞ্চল সরকার মার্কেট ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় বন্দরের বেশ কিছু বন্দরের নিজস্ব জমি রয়েছে। দীর্ঘদিন এ জমি জোর পুর্বক দখল করে রেখেছে ওই এলাকার যুবলীগ নেতা প্রভাবশালী প্রানেশ সরকার, শহিদুল ও কালামসহ বেশ কয়েকজন ভুমিদস্যু। তারা এ জমিতে মৎস্য ঘের ও স্থায়ী ঘর নির্মানের চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছিল।

শনিবার দুপুরে ওই মার্কেট এলাকায় বন্দরের জায়গায় অবৈধ ভাবে জোর পুর্বক স্থায়ী দোকান ঘর নির্মান করতে গেলে খবর পেয়ে মোংলা বন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কয়েকজন কর্মকর্তারা এতে বাধা দেয়। ঘর নির্মানে বাধা দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে প্রভাবশালী ভুমিদস্যু প্রানেশ সরকার লোকজন নিয়ে তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে মারধর ও শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে। এতে বন্দরের নিরাপত্তা হাবিলদার মোঃ ইব্রাহিম হোসেন (৪৫), আছাদুজ্জামান আছাদ (৩৮) ও বন্দরের সস্পত্তি শাখার কর্মকর্তা মোঃ নুরুল আমিন (৩৫) আহত হয়।

বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তার সহায়তায় মোংলা থানা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে বন্দরের নিরাপত্তা কর্মীদের সেখান থেকে উদ্ধার করে এবং জমি দখল বন্ধ করে দেয়। পরে সেখান থেকে বন্দরের লোকজন চলে আসলে পুনরায় ওই জমিতে ঘর নির্মান করার চেষ্টা করে প্রানেশ সরকারসহ তার দলবল। খবর পেয়ে আবারও মোংলা থানা পুলিশকে সাথে নিয়ে বন্দরের সহকারী নিরাপত্তা কর্মকর্তা মোঃ আইয়ুব আলী, গোয়েন্দা পরিদর্শক মোঃ মাসুদুর রহমানসহ সম্পত্তি শাখার লোকজন ছুটে গেলে কাজ ফেলে পালিয়ে যায় প্রানেশসহ তার দল দলবল। এঘটনায় সরকার মার্কেট এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

এব্যাপারে প্রানেশ সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাকে না পেলেও তার বড় ভাই ৪নং ওয়ার্ড আ’লীগ সভাপতি উত্তম সরকার নিরাপত্তা কর্মীদের মারধরের কথা অস্বীকার করে বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে বলেন, জমি দখলের সাথে আমার ভাই জড়িত নয়, উল্টো যারা দখল করতে আসছিল তাদের বাঁধা প্রদান করেছে প্রানেশ সরকার।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী নিরাপত্তা কর্মকর্তা মোঃ আইয়ুব আলী বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে বলেন, মোংলা বন্দরের বেশ কিছু জমি দীর্ঘদিন প্রানেশ সরকারসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনীর লোকজন জোর পুর্বক দখল করে রেখেছিল। এছাড়া দুপুরে সেই জমিতে স্থায়ী দোকান ঘর নির্মান করতে গেলে বাধা দেয় বন্দরের নিরাপত্তা কর্মীরা। এসময় তাদের মারধর ও শাররীকভাবে লাঞ্চিত করে এসকল সন্ত্রাসীরা। অফিস বন্ধ তাই এখনও কোন অভিযোগ দায়ের করা হয়নি তবে বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে অবহিত করা হয়েছে, অফিস খুললে তিনিই ব্যাবস্থা গ্রহন করবেন।

মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ইকবাল বাহার চেীধুরী বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে জানান, বন্দরের পক্ষ থেকে পুলিশের সহায়তা চাইলে সাথে সাথে এ এস আই রুহুল আমিনসহ একদল পুলিশ সেখানে পাঠানো হয়েছে এবং জমি দখল বন্ধ করে দেয়া হয়। এব্যাপারে বন্দরের পক্ষ থেকে এখনও কোন অভিযোগ আসেনি তবে অভিযোগ পেলে ব্যাবস্থা নেয়া হবে বলে জানায় এ কর্মকর্তা।