বাগেরহাটে অতিবিলম্ব হচ্ছে করোনা পরীক্ষার ফল পেতে

কলেজ শিক্ষক সালমান বিশ্বাস(৩০)। বাড়ি বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার বড়বাড়িয়া ইউনিয়নের হাড়িয়ারঘোপ গ্রামে। পিতা রুস্তম আলী বিশ্বাস। তিনি ফেনী সরকারি মহিলা কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক। গত ১ জুন শিক সালমান বিশ্বাস তার কর্মস্থল থেকে গ্রামের বাড়ি আসেন। করোনা উপসর্গ থাকায় ২ জুন তার নমুনা সংগ্রহ করে খুলনা মেডিকেল কলেজ পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়। ১২ দিন পর করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসে। এখন তিনি হোম আইসোলেশনে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মামুন হাসান নিশ্চিত করেন।

অনুরূপ ফকিরহাট উপজেলার ২৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। পরীক্ষার ফলাফল ১৪ দিন পর পৌছায় বলে ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: অসীম কুমার সমাদ্দার নিশ্চিত করেন।

করোনা পরীক্ষার ক্ষেত্রে প্রায় একই চিত্র ১৮ লাখ লোক অধ্যুষিত বাগেরহাট জেলার অধিকাংশ ক্ষেত্রে। যাত্রাপুরের জনৈক ভ্যান চালক নমুনা দেওয়ার পর ভ্যান চালিয়েছেন। ৬ দিন পর তার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। এমন ঘটনা আরও একাধিক রয়েছে।

এ বিষয়ে রবিবার বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কে.এম হুমায়ুন কবির বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, এ পর্যন্ত বাগেরহাট জেলার করোনা সন্দেহে পরীক্ষা করতে পাঠানো নমুনার ২৪০ টি পেন্ডিং আছে। আশাকরছি এগুলোর ফলাফল শীঘ্রই পেয়ে যাব। এ জেলার করোনা পরীক্ষার নমুনা খুলনা ও যশোরে পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়। সেখানে ক্রমশ: পরীক্ষার চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় কখনও কখনও ফলাফল পেতে বিলম্ব হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এ বিষয়ে বাগেরহাট সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক চৌধুরী আব্দুর রব বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, এ জেলায় পিসিআর ল্যাব না থাকায় অত্যন্ত ভোগান্তি ও উদ্বেগ বাড়ছে। প্রাণঘাতি করোনা পরীক্ষার ফলাফল পেতে অতিবিলম্ব হওয়া ভয়াবহ। কারণ এদের মধ্যে যারা পজিটিভ, তারা অজান্তে সামাজিক সংক্রমন ছড়াচ্ছে। ফলে ভয়াবহ এ রোগের দ্রæত বিস্তার হচ্ছে।

বাগেরহাট সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রিজিয়া পারভীন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, দ্রæততম সময়ের মধ্যে রেজাল্ট আসা জরুরী। আর যে ব্যক্তি নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে তাকে ফল না আসা পর্যন্ত হোমকোয়ারেন্টাইনে রাখা উচিত। এখানে জরুরী ভিত্তিতে পিসিআর ল্যাব প্রতিষ্টার দাবী জানান তিনি।

বাগেরহাট প্রেসক্লাবের সভাপতি এ্যাড: মোজাফ্ফর হোসেন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, করোনা পরীক্ষার ফল দেরীতে আসা খুব দুঃখজনক। এটা মেনে নেওয়া যায় না। ১৮ লক্ষ লোক অধ্যুষিত এ জেলায় কোন পিসিআর ল্যাব নেই এটাও কষ্টের। তাই করোনার মহা-দুর্যোগের সময়ে সঠিক পরীক্ষা ও এ জেলার মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে অতিশীঘ্র এখানে পিসিআর ল্যাব স্থাপন জরুরী বলে তিনি মনে করেন।

এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র বাগেরহাট সদর আসনের সংসদ শেখ সারহান নাসের তন্ময় বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, বাগেরহাটে পিসিআর ল্যাব না থাকায় এবং খুলনা ও যশোর ল্যাবে অতিরিক্ত চাপ থাকায় সমস্যা হচ্ছে। তবে ইতোমধ্যে এ জেলায় দ্রæত পিসিআর ল্যাব প্রতিষ্টার জন্য সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে ডিও লেটার দেওয়া হয়েছে, বিষয়টি মনিটরিং করা হচ্ছে। দ্রæত এ সমস্যার সমাধান হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তাছাড়া নমুনা সংগ্রহ করা ব্যক্তিকে রেজাল্ট না আসা পর্যন্ত হোমকোয়ারেন্টাইনে রাখা উচিৎ বলে তিনি মত দেন।