‘সিইআইপি’ প্রকল্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ

শরণখোলায় ক্ষতিপুরণ না দিয়ে জেলে পরিবারকে উচ্ছেদ

মহিদুল ইসলাম, শরণখোলা

আপডেট : ০৮:৩৮ পিএম, বুধবার, ৩০ জানুয়ারী ২০১৯ | ২৩৬৭

বাগেরহাটের শরণখোলার ধানসাগর ইউনিয়নের পশ্চিম রাজাপুর গ্রামে ভোলা নদী সংলগ্ন পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩১/১ পোল্ডারের বেড়িবাধের পাশে বসবাসকারী এক জেলে পরিবারকে ক্ষতিপূরণ না দিয়ে জমি থেকে উচ্ছেদ ও সেখানে স্লুইসগেট নির্মান করা হয়েছে। উপকূলীয় বাধরক্ষা প্রকল্প (সিইআইপ) কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত জেলে মো. মজিবর শিকদার। ক্ষতিপূরণ চেয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেও কোনো লাভ হয়নি। বর্তমানে ওই জেলে পরিবারটি চরম অসহায় অবস্থায় রয়েছে।

মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পুরনো স্লুইসগেট ও মূল খাল থেকে প্রায় ১২ ফুট সরিয়ে নতুন গেটটি নির্মান করা হয়েছে। এটি সিইআইপি প্রকল্পের ডি.এস- ১২ নম্বর স্লুইসগেট । ভোরা নদীর ভেতর পাশের সেই নতুন গেটের মুখেই জেলে মজিবর শিকদারের বসতবাড়ি। প্রায় ১৫ কাঠা জমিতে তিনি ৫০বছর ধরে ঘরবাড়ি নির্মান ও গাছপালা লাগিয়ে ভোগদখল করে আসছেন। এর মধ্যে তার শুধু বসতঘরটি ছাড়া আর সবকিছুই উচ্ছেদ করে গেট নির্মান করা হয়েছে। সেই বসত ঘরের মাটির ভিত্তিতে (মেঝে) বড় বড় ফাঁটল ধরেছে। যে কোনো সময় সেই ঘরটিও ধসে পড়বে। গেট খুলে দেওয়া হলে পানির স্রোতে তার বসত ঘরটিসহ আশপাশের বাড়িঘর, গাছপালাও ভেসে যাবে।


ক্ষতিগ্রস্ত জেলে মজিবর শিকদার বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, এই জমি তার বাপ-দাদার। পরে পানি উন্নয়ন বোর্ড তা অধিগ্রহন করলেও সেখানে তারা যুগ যুগ ধরে বসবাস করে আসছেন। সম্প্রতি টেকসই বাধের কাজ শুরু হলে ক্ষতিপুরণের তালিকায় তার নাম তালিকাভুক্ত হয়। অন্যরা ক্ষতিপূরণ পেলেও তাকে না দিয়েই জমি থেকে উচ্ছেদ করে স্লুইসগেট নির্মান করা হয়েছে।

ওই জেলে আরো জানান, তার এই বসতভিটা ছাড়া বাইরে আর কোনো জমিজমা নেই। নদীতে মাছ ধরে কোনোমতে সংসরা চলে। মাথা গোজার একমাত্র অবলম্বন হারালে পরিবার নিয়ে পথে বসতে হবে। তিনি সরকারের কাছে ন্যায্য ক্ষতিপূরণ পাওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

সাত নম্বর পশ্চিত রাজাপুর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য আমিনুল ইসলাম পিঞ্জু, প্রতিবেশী শাহ আলম হাওলাদার, ইব্রাহীম হাওলাদারসহ অনেকেই বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, মজিবর শিকদার ৫০বছর ধরে ওই জমিতে বসবাস করছেন। তাকে ক্ষতিপূরণ না দিয়ে উচ্ছেদ করাটা অমানবিক হয়েছে। মূল খালের ওপর দিয়ে গেটটি নির্মান করা হলে ওই পরিবারটি রক্ষা পেত।

সিইআইপ প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী শ্যামল দত্ত বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, ‘সিএইচডাব্লিউই’ নামের চায়নার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। ওখানে একবছর আগে তাদের গেটে নির্মানের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন অভিযোগ করে আসলে তেমন কোনো লাভ হবেনা।

শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিংকন বিশ্বাস অসহায় পরিবারটিকে খাস জমি বন্দোবস্ত দেওয়া আশ্বাস জানিয়ে বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, ক্ষতিপুরণ দেওয়ার ব্যাপারে আমার কোনো হাত নেই। এটা সম্পূর্ণ ডিসি অফিস নিয়ন্ত্রন করে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত