মোরেলগঞ্জে জনমনে ক্ষোভ

স্কুলের পাঠদান বন্ধ করে শ্রেণিকক্ষে ইউপি চেয়ারম্যানকে সংবর্ধনা !

মোরেলগঞ্জ প্রতিনিধি

আপডেট : ১১:৪১ পিএম, বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ ২০২২ | ৪০০

পাঠদান বন্ধের পর শিক্ষার্থীরা শ্রেণি কক্ষের বাইরের বারান্দা হতে শ্রেণি কক্ষের ভিতরে চেয়ারম্যানের সংবর্ধনা দেখছে

মোরেলগঞ্জে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান বন্ধ করে শ্রেণিকক্ষে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে ২টা পর্যন্ত এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান চলে মোরেলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ১২১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সংবর্ধণা গ্রহণ করেন সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোল্লা হুমায়ুন কবির। এ সময় গোটা বিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থীর পাঠদান পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়। এই ঘটনার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, ১২১ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নাজমা আক্তার সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোল্লা হুমায়ুন কাবিরের স্ত্রী। সেই ক্ষমতাবলে আজ পাঠদান বন্ধ করে ওই বিদ্যালয়ের তরফ থেকে চেয়ারম্যানকে সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন মানুষকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের নিমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি দেন। চিঠিতে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নাজমা আক্তারের স্বাক্ষরও রয়েছে, যদিও তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।


সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মোল্লা হুমায়ুন কবির। বিদ্যালয়ের তরফ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফুলের মালা পড়িয়ে তাকে বরণ করা হয়। হাতে কিছু উপহার সামগ্রীও তুলে দেন শিক্ষকরা। এই সংবর্ধণা অনুষ্ঠানে পার্শ্ববর্তী ২১৪ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. গোলাম মোস্তফা, সহকারি শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র ও ২৭৪ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুনীতি বালাসহ চেয়ারম্যানের অনুসারি লোকজন অংশগ্রহণ করেন।

বিদ্যালয় চলাকালীন পাঠদান বন্ধ করে কেন এই সংবর্ধণা অনুষ্ঠানের আয়োজন তা জানতে চাইলে নাজমা আক্তার বলেন, সংবর্ধণা নয় মা সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। চেয়ারম্যানও একই সুরে বলেন, মা সবাবেশে সকলকে সচেতন করার জন্য আলোচনা করা হয়েছে। কিন্তু তাদের ব্যানার ও চিঠিতে পরিস্কারভাবে লেখা রয়েছে ‘সংবর্ধণা।’

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ক্লাষ্টারের সহকারি শিক্ষা কর্তকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ করে সংবর্ধণার বিষয়ে তাকে কেউ অবগত করেনি। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জালাল উদ্দিন বলেন, পাঠদান বন্ধ করে শ্রেণিকক্ষে কাউকে সংবর্ধণা দেওয়া সম্পূর্ন বিধি বহির্ভূত কাজ। বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত