সন্ত্রাসী হামলায় কৃষকের মৃত্যুর ঘটনায় আদালতের নির্দেশে মামলা, বাদীকে হুমকি
01/01/1970 12:00:00নিজস্ব প্রতিবেদক
মোরেলগঞ্জ উপজেলার চিংড়াখালী ইউনিয়নের ইউপি সদস্যের বাড়ীতে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও মারপিটে গুরুতর আহত ইউপি সদস্যের ভাই মো. বাবুল বক্স (৪৭) নিহতের ঘটনায় অবশেষে মামলা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে মৃত্যুর ১০ দিন পরে শুক্রবার (৩০ আগস্ট) রাতে মোরেলগঞ্জ থানা পুলিশ মামলাটি গ্রহন করেন। ৭জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১৫-২০জনকে আসামী করে নিহতের ভাইয়ের স্ত্রী জাহানারা বেগম এই মামলা দায়ের করেন।
এর আগে থানায় মামলা না নেওয়ায় ২৮ আগস্ট বাগেরহাট জেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলার আবেদন করেন জাহানারা বেগম । নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে ২৯ আগস্ট ওই আদালতের বিচারক মোঃ কামরুল আজাদ মোরেলগঞ্জ থানাকে ৩ দিনের মধ্যে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫৬ (৩) ধারা অনুযায়ী মামলাটি এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেন। তবে মামলা হলেও, বিপাকে রয়েছেন বাদী ও নিহতের স্বজনরা। প্রতিনিয়ত আসামীদের হুমকিতে আতঙ্কিত বাদী ও স্বজনরা।
আসামীরা হলেন, মোরেলগঞ্জ উপজেলার দক্ষিন চিংড়াখালী এলাকার মোঃ দুলাল বক্স (২৮), মোঃ মামুন বক্স (৩৮), মোঃ আবু বকার হাওলাদার (৩৬), মোঃ হাচেন হাওলাদার (৪০), মোঃ স্বপন শিকদার (৪৮), মোঃ রমিজ শিকদার ওরফে অপু (৩০) ও মোঃ নাইম খান (২৪)। হামলার পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন দুলাল ও তার লোকজন। নিহত মো. বাবুল বক্স দক্ষিন চিংড়াখালী গ্রামের মৃত মুনসুর বক্সের ছেলে ও চিংড়াখালী ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. বাদল বক্সের ভাই। তার স্ত্রী , ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে রয়েছে।
মামলা সূত্রে জানাযায়, ৫ আগস্ট রাতে আসামীরা নিহতের ভাই ইউপি সদস্য বাদল বক্সের বাড়িতে লুট করতে আসে। খবর শুনে বাবুল বক্স বাদলের বাড়ির দিকে রওনা দেন। লুট শেষে ফেরার পথে আসামীরা বাবুল বক্সকে এলোপাথারি কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে পিরোজপুর হাসপাতালে পরে তার অবস্থা আরও অবনতি হলে উন্নত চিকিৎর জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিউতে থাকা অবস্থায় মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) রাতে মারা যায়। পরের দিন বিকেলে নিজ বাড়িতে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
নিহতের ভাই ইউপি সদস্য বাদল বক্স বলেন, গত ৫ আগষ্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ওই দিন দিবাগত রাত পৌনে ১২ টার দিকে চরগোপালপুর আমার স্ত্রী সংরক্ষিত সদস্য জাহানারা বেগমের বাড়িতে দুলাল বক্স, স্বপন শিকদার ও মামুন বক্সের নেতৃত্বে ২৫-৩০ জনের একটি দূর্বৃত্ত দল পূর্বশত্রুতার জেরধরে ঘরের দরজা ভেঙ্গে প্রবেশ করে হামলা ও ভাংচুর চালায়। হামলাকারীরা ঘরে থাকা স্বর্ণলংকার, নগদ টাকা, ৮৫ বস্তা সুপারীসহ প্রায় ২০ লাখ টাকার বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যায়। যাওয়ার পথে আমার বড় ভাই বাবুল বক্সকে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে ও কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। পরে আমার ভাই মারা যায়। আমি আমার ভাইয়ের মৃত্যুর বিচার চাই।
মামলার বাদী ও সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য জাহানারা বেগম বলেন, আমাদের বাচাঁতে গিয়ে তিনি মারা গেলেন। আমরা থানায় ঘুরেও মামলা করতে পারিনি। আদালতের নির্দেশে পুলিশ মামলা নিলেও, এখনও কোন আসামী গ্রেপ্তার করেনি। উল্টো আসামীরা মামলা তুলে নিতে আমাদের হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। আমরা এই হত্যার বিচার চাই।
মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামসুদ্দীন বলেন, আদালতের নির্দেশে আমরা মামলা গ্রহন করেছি। আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ শুরু করেছে।