Logo
table-post
প্রধান শিক্ষকের দূর্নীতির তদন্ত প্রভাবিত করার অভিযোগ শিক্ষা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে
01/01/1970 12:00:00

নিজস্ব প্রতিবেদক,
বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলার কালশিরা রাজেন্দ্র স্মৃতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিধান চন্দ্র ব্রহ্মের বিরুদ্ধে ৪৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও বিভিন্ন অনিয়মের তদন্ত প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলার দুই শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। ওই দুই শিক্ষা কর্মকর্তাকে বদলি এবং জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দিয়ে তদন্ত করার জন্য রবিবার (০৫ জানুয়ারি) জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও দুদকে আবেদন করেছেন ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা।


লিখিত আবেদন ও শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানাযায়, উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিধান চন্দ্র ব্রহ্ম ২০১৬ সালে কালশিরা রাজেন্দ্র স্মৃতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগযান করেন। যোগদানের পর থেকে তিনি বিদ্যালয়ের আয় ব্যয়ের কোন হিসেব দেয় নি। এর প্রেক্ষিতে ২৬ অক্টোবর শিক্ষক পরিষদের সভায় প্রধান শিক্ষক বিধান চন্দ্র ব্রহ্মের আমলে আয়-ব্যয়ের সকল হিসাব নিরিক্ষার জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি প্রধান শিক্ষকের দাখিলকৃত হিসাব সংক্রান্ত নথিপত্র নিরীক্ষা করে ২৬ নভেম্বর হিসাব দাখিল করেন। নিরীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রধান শিক্ষক বিধান চন্দ্র ব্রহ্ম ৪৫ লাখ ৩৮ হাজার ২৭৬ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সহকারী শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোছাঃ কামরুননেছাকে অভিযোগ তদন্তের আদেশ দেন।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অভিযোগের তদন্তের জন্য ৩১ ডিসেম্বর অভিযোগকারী শিক্ষকদের ১লা জানুয়ারি তার কার্যালয়ে আসার জন্য নোটিশ দেয়। কিন্তু  ওই দিন তার কার্যালয়ে শিক্ষকরা আসলে, তদন্তের সময় পিছানো হয়েছে বলে জানানো হয়।


শিক্ষকদের অভিযোগ, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোছাঃ কামরুননেছা সঠিকভাবে তদন্ত না করে, একাডেমিক সুপারভাইজার প্রদীপ কুমার ভৌমিককে সাথে নিয়ে প্রধান শিক্ষকের পক্ষ নিয়েছেন। তদন্ত প্রভাবিত করে প্রধান শিক্ষককে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন বলে জানান শিক্ষকরা। 


সহকারি শিক্ষক প্রভাত কুমার মজুমদার বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করায় তিনি আমাদের নানা রকম ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। অন্যদিকে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তদন্তের সময় পিছিয়ে তদন্ত প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। এর সাথে একাডেমিক সুপারভাইজার প্রদীপ কুমার ভৌমিকও নানাভাবে প্রধান শিক্ষককে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। এই দুই কর্মকর্তাকে বাদ দিয়ে জেলা পর্যায়ের কোন কর্মকর্তাকে দিয়ে তদন্ত করালে সঠিক তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে জানান এই শিক্ষক।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোছাঃ কামরুননেছা বলেন, তদন্তের তারিখ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু প্রধান শিক্ষক সময় চেয়েছে, যার কারণে তদন্ত কিছুটা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।


একাডেমিক সুপারভাইজার প্রদীপ কুমার ভৌমিক বলেন, বিষয়টি সমাধানের জন্য প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষকদের মুঠোফোনে অনুরোধ করেছিলাম। তারা রাজি না হওয়ায় এ বিষয়ে আমি আর কথা বলিনি।


এ বিষয়ে বাগেরহাট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম ছায়েদুর রহমান বলেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। তদন্তে অপরাধ প্রমানিত হয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

@bagerhat24.com