Logo
table-post
সুন্দরবন উপকূলে দুর্যোগপুর্ণ আবহাওয়া ও বৃষ্টি, মোংলা বন্দরে সার খালাস বন্ধ
01/01/1970 12:00:00

মোংলা প্রতিনিধি


বঙ্গোপসাগরে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি হওয়ায় গত তিন দিনের টানা ভারী বৃষ্টিতে স্থবির হয়ে পড়েছে সুন্দরবনসংলগ্ন মোংলা উপকূলের জনজীবন। ফলে শনিবার রাত থেকেই সুন্দরবন উপকূলে দুর্যোগপুর্ণ আবহাওয়া ও বৃষ্টি শুরু হয় মোংলা বন্দর সহ এর আশপাশ এলাকায়। গত তিন দিন ধরে লাগাতার বিরামহীনভাবে বৃষ্টি হচ্ছে। সাগর উত্তল থাকায় মোংলা বন্দরে তিন নম্বর স্থানীয় সর্তক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়াবিদরা। এদিকে বৃষ্টির ফলে মোংলা বন্দরে অবস্থানরত দেশ-বিদেশী ৮টি বানিজ্যিক জাহাজের দুটি সার বোঝাই জাহাজের খালাস কাজ বন্ধ রয়েছে বলে জানায় বন্দরের হারবার বিভাগ। 


আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সাগরে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি হওয়ায় উপকূলঝুড়ে চলছে বিরামহীন বৃষ্টি। সকাল সন্ধ্যা আকাশ মেঘাচ্ছন্ন এবং বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া শনিবার থেকে সোমবারও সুন্দরবন উপকুল অঞ্চলে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে। যার কারনে গত তিনদিন ধরে মোংলা বন্দরসহ সুন্দরবন উপকুল অঞ্চলে বৃষ্টি ও দুর্যোগপুর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে। দিনের বেলায় সূর্যের দেখা মিলছে না। এতে বিপাকে পরেছে দৈনন্দিন খেটে খাওয়া এ অঞ্চলের নিম্ন আয়ের মানুষগুলো।


অপরদিকে হালকা ও ভারী বৃষ্টির ফলে বন্দরে অবস্থানরত সার ছাড়াও অন্যান্য সামুদ্রিক জাহাজ থেকে পণ্য খালাস কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে। মোংলা বন্দরে অবস্থান করা ৮টি পন্যবাহী জাহাজের মধ্যে দুটি সারের জাহাজে পন্য খালাস সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। খালাস বন্ধ হওয়া বিদেশি জাহাজ দুটিতে কানাডা থেকে সার আমদানি করা হয়েছে। মোংলা বন্দর কর্তৃপরে হারবার বিভাগ সোমবার (২৬ আগষ্ট) দুপুর সাড়ে ১২টায় এ তথ্য নিশ্চিত করে। 


মোংলা বন্দরের ৬ নম্বর বয়ায় নোঙ্গর করা পানামা পতাকাবাহী “এমভি ফেডারেল ইবুকু” ও হারবাড়িয়া ১১ নম্বর বয়ায় নোঙ্গর করা লাইব্রেরিয়া পতাকাবাহী “এমভি সেন্টিনেল” জাহাজ দুটির কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। সার বোঝাই জাহাজের স্থানীয় শিপিং এজেন্ট পার্ক শিপিংয়ের ব্যবস্থাপক মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, গত ২৯ জুলাই কানাডা থেকে ফেডারেল ইবুকি জাহাজে ২৯ হাজার ৫০০ টন সার আমদানি করা হয়। এরমধ্যে ৬ হাজার ৫০০ টন সার খালাস করা গেছে। এছাড়া একই দেশ থেকে গত ২৫ আগষ্ট সেন্টিনেল জাহাজে করে ২৬ হাজার টন সার আমদানি হয়। সেই জাহাজ থেকে এখন পর্যন্ত সার খালাসই শুরু করা হয়নি। গত তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে জাহাজ দুটি থেকে সার খালাস বন্ধ রাখা হয়েছে। বৃষ্টি কমে গেলে পুনরায় সার খালাস করা হবে বলেও জানান বন্দরের হারবার বিভাগ। এছাড়া বন্দর চ্যানেলে অবস্থান করা কিংকার, জিপসাম, মেশিনারিসহ আরও ছয়টি জাহাজ থেকে পন্য খালাস বিঘ্নিত হচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে বন্দরের জেটি এলাকায় কার্যক্রম রয়েছে সাভাবিক। 


বিরামহীনভাবে মোংলা বন্দর ও এর আশপাশ এলাকায় থেমে থেমে হালকা ও ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। গত তিন দিন পর্যন্ত বেলায় সূর্যের দেখা মিলছেনা। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারনে বিপাকে পরেছে শহরের চলাচলকারী, শিল্প প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং মোংলা ইপিজেজে কর্মরত সাধারন শ্রমিকরা। ফলে সড়কগুলোতে যান বাহন চলাচলকারী ও নিম্ম আয়ের মানুষের দুর্ভোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। 


সাগর উত্তল থাকায় সুন্দরবনের অভ্যন্তরে ও সাগরে জেলেরা মাছ ধরতে নামতে পারছেনা। মাছ আহরনে যাওয়া জেলে ও তাদের ট্রলারগুরো সুন্দরবনের বিভিন্ন খালে আশ্রায় নিতে দেখা গেছে। 
অপরদিকে গত তিনদিন ধরে টানা ভারী বৃষ্টিতে মোংলা পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে দুর্ভোগ বেড়েছে মানুষের। তডিয়ে রয়েছে উপজেলার বিভিন্ন চিংড়ি ঘের। সড়কে পানি জমে থাকায় ভোগান্তি বেড়েছে সাধারন মানুষের। মোংলা এলাকায় টানা বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চল তলিয়ে অন্তত এক হাজারের ওপরেও বেশী চিংড়ি ঘের ডুবে গেছে বলে জানায় মোংলা উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অঞ্জন বিশ্বাস।
 

@bagerhat24.com