Logo
table-post
লাভ তো দূরের কথা, আসলই দিচ্ছে না -সংবাদ সম্মেলনে তিন দিনমজুর
01/01/1970 12:00:00

চিতলমারী প্রতিনিধি 
‘আমরা সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। পরের জমিতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করি। ভবিষ্যৎ বলতে কিছুই নেই। এই দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে প্রগ্রেসিভ লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানী লিমিটেড আমাদের সাথে যোগাযোগ করে। তারা ১৬ বছরে জমা টাকার দ্বিগুন ও তিনটি বোনাসের আশ্বাস দেন। বিপদ-আপদ ও ভবিষ্যতের কথা ভেবে আমরা ২০০৬ সালের ৩১ আগস্ট বীমা শুরু করি। শীত, বর্ষা, গরমে গায়ের ঘাম ঝরানো টাকা তিলেতিলে জমা করেছি। ২০২২ সালে সেই বীমা অংকের টাকা জমা শেষ হয়েছে। দুই বছর আগে সকল কাগজপত্র ও দলিল জমা দিয়েছি। এখন লাভ তো দূরের কথা। আসল টাকাই ফেরত দিচ্ছে না। পদে পদে হয়রানির শিকার হচ্ছি। আমাদের মত নিরক্ষর কিংবা স্বল্প শিক্ষিত আরও মানুষও এমন হয়রানির শিকার হচ্ছেন।’ 


বুধবার (১৩ নভেম্বর) বেলা ১২ টায় বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ সব অভিযোগ করেন সাবোখালী গ্রামের রবিন বিশ্বাস, গোপাল বিশ্বাস ও হরেন বিশ্বাস। 


রবিন বিশ্বাস সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘আজ থেকে ১৮ বছর আগে অর্থাৎ ২০০৬ সালে প্রগ্রেসিভ লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানী লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মিরা নানা প্রলোভন দিয়ে আমাকে দিয়ে বীমা শুরু করায়। আমি তাদের লোভনীয় অফারে ৩১/০৮/২০০৬ ইং তারিখ বার্ষিক ৪ হাজার চল্লিশ টাকার প্রিমিয়ামে মোট ১৬ বছরে জমার দ্বিগুনসহ ৩ টি বোনাসের চুক্তিতে বীমা শুরু করি। ২০২২ সালে সেই বীমার কিস্তির টাকা জমা শেষ হয়েছে। দুই বছর আগে সকল কাগজপত্র ও দলিল জমা দিয়েছি। আসল টাকাই ফেরত দিচ্ছে না। পদে পদে হয়রানির শিকার হচ্ছি।’ 


সম্মেলনে হরেন বিশ্বাস বলেন, ‘একই চুক্তিতে আমি ৩ হাজার ১৪৮ টাকার বীমা শুরু করি। আমারও গত ২০২২ সালে ১৬ বছর পূর্ণ হয়েছে। আমি মোট ১৬ কিস্তি টাকা পরিশোধ করেছি। প্রগ্রেসিভ লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানী লিমিটেড বাগেরহাট শাখার লোকজন লাভসহ টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে ২ বছর আগে আমার কাছ থেকে সকল প্রকার কাগজপত্র ও দলিল বুঝে নিয়ে অদ্যবধি আমার লাভতো দূরের কথা আসল টাকাই ফেরত দেয়নি। 


সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে গোপাল বিশ্বাস বলেন, ‘একই চুক্তিতে বার্ষিক ১ হাজার ৯৩৮ টাকার বীমা শুরু করি। গত ২০২২ সালে আমারও ১৬ বছর পূর্ণ হয়েছে। প্রগ্রেসিভ লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানী লিমিটেড বাগেরহাট শাখার মোঃ জাকির হোসেন লাভসহ টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে ২ বছর আগে আমাদের কাছ থেকে সকল প্রকার কাগজপত্র ও দলিল বুঝে নিয়ে অদ্যবধি আমাদের লাভতো দূরের কথা আসল টাকাই ফেরত দেয়নি। আমরা সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। এখন দিনের পর দিন বাগেরহাট গিয়ে গত ২ বছর ধরে চরম হয়রানির শিকার হচ্ছি। বিপদ-আপদ ও ভবিষ্যতের কথা ভেবেই তিলে তিলে এ সঞ্চয় করেছিলাম। উক্ত টাকা ছাড়া আমাদের আর কোন সম্বল নাই। আমরা উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনাসহ টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।’


এ ব্যাপারে প্রগ্রেসিভ লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানী লিমিটেড বাগেরহাট জেলা শাখার অফিসার মোঃ জাকির হোসেন মুঠোফোনে সাংবাদিকদের জানান, কোম্পানীর আর্থিক সংকট থাকায় এ সব গ্রাহকদের জমাকৃত বীমার টাকা এই মুহুর্তে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। অনেকেই টাকা পাবেন। আমরা টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চেষ্টা করছি।’ 
  

@bagerhat24.com