যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলসহ বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে মামলা, দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল
01/01/1970 12:00:00নিজস্ব প্রতিবেদক
বাগেরহাটের কচুয়ায় পলাশ শেখের মূল হত্যাকারীদের আসামী না করে উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব শেখ মহিউদ্দিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব শামীম হাসান রাবুসহ নিরপরাধ মানুষদের আসামী করে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দেওয়ার প্রতিবাদে দফায় দফায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।অভিযোগ উঠেছে গোপনে হত্যাকারীদের সাথে আততাদের মাধ্যমে এই ষড়যন্ত্রমূলক মামলা করেছেন হত্যার শিকার পলাশের বোন সালমা বেগম। সকালে কচুয়া উপজেলা সদর, সাইনবোর্ড বাজার, বাধাল বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় উপজেলা বিএনপির আয়োজনে এক বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা হয়।
প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন, কচুয়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক হাজরা আছাদুল ইসলাম পান্না, সদস্য সচিব তৌহিদুল ইসলামসহ দলীয় নেতাকর্মীরা।
বক্তারা বলেন, বিএনপি আব্দুর রব ও হুমায়ুন কবিরের নির্দেশে এবং নেতৃত্বে তাদের ভাগ্নে পলাশকে হত্যা করা হয়েছে। পলাশদের সাথে তাদের জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে এই হত্যার ঘটনা ঘটেছে এটা দিনের আলোর মত সত্যি। পলাশের মা ও বোন স্পষ্টভাবে এই বক্তব্য দিয়েছেন। কিন্তু মামলায় তাদেরকে আসামী না দিয়ে সব নিরপরাধ মানুষকে আসামী দেওয়া হয়েছে। আমরা এই মিথ্যা মামলার প্রতিবাদ জানাই, প্রকৃত আসামীদের খুজে বের করে শাস্তি দাবি করেন মানবন্ধনকারীরা।
কচুয়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক হাজরা আছাদুল ইসলাম পান্না বলেন, এই মামলায় অনেক নিরাপরাধ বিএনপির নেতাকর্মীদের আসামী করা হয়েছে। নিরাপরাধ মানুষদের নামের মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। সেই সাথে দ্রুত সময়ের মধ্যে মূল হত্যাকারীদের শনাক্ত এবং গ্রেপ্তারের দাবি জানান এই নেতা।
উল্লেখ, ২৯ অক্টোবর রাতে ফতেপুর বাজার এলাকায় পলাশ শেখ (৩৬) নামের এক যুবককে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পরের দিন বুধবার (৩০ অক্টোর)সকালে থানার সামনে বসে পলাশের মা, বাবা, বোন ও স্ত্রী বলেছিলেন জমি সংক্রান্ত বিরোধের কারণে পলাশের মামা বিএনপি নেতা আব্দুর রব ও হুমায়ুন কবিরের নির্দেশ এবং নেতৃত্বে এই হত্যাকান্ড ঘটেছে।কিন্তু গেল ৩ নভেম্বর পলাশের বোন সালমা বেগম বাদী হয়ে ৫৩ জনকে আসামী করে বাগেরহাট আদালতে একটি মামলা করেন। মামলার নথিতে দেখা যায়, উপজেলা যুবদল নেতা শেখ মহিউদ্দিন, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা শামীম হাসান রাবু, কচুয়া প্রেসক্লাবের সদস্য দৈনিক জবাবদিহি পত্রিকার বাগেরহাট প্রতিনিধি শামীম হাসানকেও আসামী করা হয়েছে। অন্যদিকে আব্দুর রব ও তার ভাই হুমায়ুন কবিরসহ হত্যার সাথে জড়িতদের এই মামলায় স্বাক্ষী রাখা হয়েছে।
বুধবার সালমা বেগমও বলেছিলেন, তাদের মামা আব্দুর রব ও হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে ও নির্দেশে এই হত্যার ঘটনা ঘটেছে।
নিহতের মা হেলেনা বেগম বলেছিলেন, বাবার বাড়িতে পাওয়া প্রায় দেড় বিঘা জমি জাল দলিল করে আমার ভাই বিএনপি নেতা আব্দুর রব ও কবির জাল দলিল করে নিয়েছেন। জমি ফেরত চাওয়াকে কেন্দ্র করে ভাইদের সাথে আমাদের পরিবারের বিরোধ ছিল। কয়েককদিন আগে জমি ফেরত চাইলে রব ও কবির আমার ছেলে পলাশকে বাড়ি থেকে বের হতে নিষেধ করে। স্থানীয় শিমুল কয়েকবার ফোন করে, কুমারগাড়িয়া ঘেরের (সরকারি জমিতে দখল করা ঘের) ভাগের টাকা দেওয়ার কথা বলে ডেকে নেয়। বাইরে থেকে আনা ৫জন লোক এবং স্থানীয় অনেক লোককে দিয়ে রব ও কবির আমার ছেলেকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে মেরে ফেলেছে। পরে পুলিশ খবর পেয়ে আমার ছেলেকে নিয়ে আসছে। আমি রব-কবির এবং যারা আমার ছেলেকে মেরেছে তাদের ফাসি চাই।
এ বিষয়ে কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)মোঃ রাশেদুল আলম বলেন, আদালতের আদাশে আমরা মামলা নথিভুক্ত করেছি। তদন্ত পূর্বক আসামীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদি কোন নিরাপরাধ ব্যক্তিকে আসামী করা হয়, তাকে অব্যাহতি দেওয়া হবে। কোন অপরাধি যদি আসামী না হয়, তাকেও আসামী করে গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
তবে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য পলাশের স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করা হলেও, তাদের কাউকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি এবং ফোন রিসিভ করেননি।