রামপালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা খাদিজার এন্তার অভিযোগ, তদন্ত কমিটি গঠন
01/01/1970 12:00:00এম, এ সবুর রানা
রামপালের কিসমত ঝনঝনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা খাদিজা খাতুনের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও গ্রামবাসী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বারাবর গণস্বাক্ষরযুক্ত অভিযোগ দিয়েছেন। সরোজমিনে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কিসমত ঝনঝনিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা খাদিজা খাতুন ২০১৮ সালে ওই বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। এরপর থেকে তিনি বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। এর মধ্যে তিনি বিদ্যালয়ের ৩ টি শিরিশ গাছ কেটে তার বাড়ীতে নিয়ে যান। ক্ষুদ্র মেরামত বাবদ ২ লক্ষ টাকায় টিনসেড ঘর করে প্রায় লক্ষাধিক টাকা পকেটে পুরেন। ৩ বছরের রুটিন মেইন্টেনেসের ১ লাখ ২০ হাজার টাকার ভূয়া বিল ভাউচার করে তা শিক্ষা অফিসে জমা দিয়ে প্রায় সমুদয় টাকা আত্মসাৎ করেন। প্রতি বছরের স্লিপের ৫০ হাজার টাকা তুলে ভূয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেন। প্রাক প্রাথমিকের শিশুদের বিভিন্ন উপকরণ বাবদ ৪০ হাজার টাকার মধ্যে নাম মাত্র সামান্য কিছু উপকরণ কিনে বাকি টাকা আত্মসাৎ করেন। প্রতি ৬ মাস অন্তর বরাদ্দকৃত কন্টিজেন্সির সব টাকা তুলে তা বাড়ীতে নিয়ে যান।
এ সকল অভিযোগের বিষয়ে সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রুটিন মেইন্টেনেন্সের টাকা বিল ভাউচারে বিভিন্ন কাজে খরচ দেখিয়ে মূলত তিনি সেই টাকা বিভিন্ন প্রোগ্রামে যেমন, বন ভোজন, বিভিন্ন দিবসে আপ্যায়ন খরচ হয়েছে বলে অন্য একটি খাতায় দেখান। এ ছাড়াও ল্যাট্রিন নির্মাণ, বিদ্যালয়ে বাগান তৈরী, বেঞ্চ মেরামত, টিন, বাঁশ, তার ক্রয় ও মুজুরি বাবদ খরচ দেখিয়েছেন। ৬ হাজার ৫৮০ টাকায় ২ টি চেয়ার কেনার হিসাব দেখালেও বাস্তবে কোন চেয়ার কেনেনি।
এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো, তিনি বিগত আওয়ামীলীগের আমলে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে এমনভাবে ভীতির পরিবেশে সৃষ্টি করেন যে, তার ভয়ে অভিভাবক ও এলাকাবাসী ভয়ে চুপ থেকেছে। রবিবার (২০ অক্টোবর) বেলা ১১ টায় ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, তড়িঘড়ি করে কিছু তক্তা কাঠ বিদ্যালয়ের তালা ভেঙ্গে বিদ্যালয়ে রাখার চেষ্টা করলে এলাকাবাসী বাঁধা দেন ও বিক্ষোভ করেন।
ওই বিদ্যালয়ের কমিটি গঠনেও রয়েছে ওই শিক্ষিকার সেচ্ছাচারিতা। তার বাড়ী ওই এলাকায় হওয়ায় তিনি তার পছন্দমত লোক দিয়ে কমিটি করতেন। এমন কি জমি দাতা গোলাম সরোয়ারকে তিনি কোন দিন ডাকেননি। এ জন্যে অভিযোগকারীগণ তারা নিরপেক্ষ তদন্তসহ বিধি মোতাবেক ব্যাবস্থা গ্রহনসহ অপসারণের জোর দাবী করেন।
অভিযোগের বিষয়ে ওই প্রধান শিক্ষিকা খাদিজা খাতুন বলেন, কিছু অসংগতি আছে। আমার কিছুটা ভুল হয়েছে। তবে আমি বড় ধরনের কোন অনিয়ম করিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. আসাদুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, অভিযোগের কপি পেয়েছি। ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৭ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জামা দেওয়ার কথা রয়েছে। তদন্তে কোন অনিয়মের সুযোগ নেই। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে বিধি মোতাবেক ব্যাবস্থা নেয়া হবে।