রামপালে এইচএসসি পরীক্ষায় ফল বিপর্যয়
01/01/1970 12:00:00
এম, এ সবুর রানা
এইচএসসি পরীক্ষায় রামপাল সরকারি কলেজসহ ৩ টি কলেজে ফল বিপর্যয় ঘটেছে। বরাবরের মত এবারও তুলনামূলকভাবে মাদরাসাগুলো ভালো করলেও কারিগরি (বিএম) শাখার ফলাফলে কিছুটা বিপর্যয় ঘটেছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, রামপাল সরকারি ডিগ্রী কলেজে এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন ১০৮ জন। পাশ করেছেন ৫১ জন। ফেল করেছেন ৫৭ জন। কেউ জিপিএ পাননি। পাশের হার ৪৭.২২ ভাগ।
গিলাতলা আবুল কালাম ডিগ্রী কলেজে পাশ করেছেন ৩৭ জন। ফেল করেছেন ৯৮ জন। জিপিএ পেয়েছেন ১ জন। পাশের হার ২৭.৪১ ভাগ।
ভাগা সুন্দরবন মহিলা কলেজে পাশ করেছেন ৬৫ জন। ফেল করেছেন ১০৯ জন। জিপিএ পেয়েছেন ৮ জন। পাশের হার ৩৬.৯৯ ভাগ।
রামপালে ৩ টি কলেজে মোট পাশের হার ৩৬.৫৪ ভাগ। যশোর বোর্ডে এবার পাশের হার ৬৮.৮৮ ভাগ হলেও সেখানে রামপালে পাশের হার প্রায় তার অর্ধেকে নেমে গেছে।
কারিগরি (বিএম) শাখায় কিছুটা ফলাফল ভালো করলেও সেটিও আশাব্যঞ্জক নয়। রামপাল সরকারি কলেজে বিএম শাখায় পাশ করেছেন ৫৭ জন। ফেল করেছেন ২৯ জন। জিপিএ পেয়েছেন ৩ জন। পাশের হার ৬৬.২৮ ভাগ। সুন্দরবন মহিলা কলেজে পাশ করেছেন ২৬ জন। ফেল করেছেন ৪ জন। জিপিএ পেয়েছেন ২ জন। পাশের হার ৮৬.৬৭ ভাগ। শরাফপুর কারামতিয়া ফাজিল মাদরাসায় পাশ করেছেন ১১ জন। ফেল করেছেন ২৫ জন। জিপিএ পেয়েছেন ১ জন। পাশের হার ৩০.৫৬ ভাগ। বিএম শাখায় মোট পাশের হার ৬১.৮৪ ভাগ।
উপজেলার ৭ টি মাদরাসার মধ্যে ফয়লাহাট আছিয়া আলিম মাদরাসায় পাশ করেছেন ৪৪ জন। ফেল করেছেন ৪ জন। জিপিএ পেয়েছেন ৫ জন। পাশের হার ৯১.৬৭ ভাগ। খেজুরমহল টিআর আলিম মাদরাসায় পাশ করেছেন ২৪ জন। ফেল করেছেন ৮ জন। জিপিএ পেয়েছেন ১ জন। পাশের হার ৬৮.৯৭ ভাগ। শরাফপুর কারামতিয়া ফাজিল মাদরাসায় পাশ করেছেন ৪০ জন। ফেল করেছেন ৭ জন। জিপিএ পেয়েছেন ৩ জন। পাশের হার ৮৫.১১ ভাগ। গোবিন্দপুর এজেএস ফাজিল মাদরাসায় পাশ করেছেন ১৪ জন। ফেল করেছেন ৪ জন। কেউ জিপিএ ৫ পাননি। পাশের হার ৭৭.৭৮ ভাগ। ইসলামাবাদ সিদ্দিকীয়া ফাজিল মাদরাসায় পাশ করেছেন ১৩ জন। ফেল করেছেন ৮ জন। জিপিএ ৫ পেয়েছেন ১ জন। পাশের হার ৬১.৯০ ভাগ। মল্লিককেরবেড় ফাজিল মাদরাসায় পাশ করেছেন ১৩ জন। ফেল করেছেন ৩ জন। জিপিএ ৫ পাননি কেউই। পাশের হার ৮১.২৫ ভাগ। সোনাতুনিয়া আজিজিয়া ফাজিল মাদরাসায় পাশ করেছেন ১৭ জন। ফেল করেছেন ৩ জন। জিপিএ ৫ পেয়েছেন ১ জন। পাশের হার ৮৫ ভাগ। ৭ টি মাদরাসায় মোট পাশের হার ৮০.৯০ ভাগ।
খোজ নিয়ে দেখা গেছে, কলেজ গুলোতে লেখাপড়ার মান নিন্মগামী হওয়ায় এমন ফল বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেছে। অভিভাবক ও সচেতন মহলের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিগত সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্বিচারে দলীয়করণ করা হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রকৃতভাবে মেধাবী শিক্ষক না নিয়ে নির্লজ্জভাবে অযোগ্যদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ওই সব শিক্ষক ক্লাস মুখি না হয়ে দলীয় সভা সমাবেশ করে বেড়িয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে অধিকাংশ শিক্ষক পাঠ দান না করে বেলা ১ টার আজানের পর পরই কলেজ ত্যাগ করেছেন। যা এখনো অব্যাহত আছে। এ ছাড়াও শিক্ষক-অভিভাবকের দূরত্ব সৃষ্টি করা, পাঠদানে আন্তরিক না থাকা, শিক্ষকদের ভেতরের কেউ কেউ দূর্নীতিতে জড়িয়ে পড়া, শিক্ষকদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা, সরকরি কলেজের শিক্ষকদের সাংবাদিকতার নামে ক্লাসের বাইরে থাকা ও ফাঁকিবাজি করাকে দূষছেন অনেকেই।
এর থেকে বেরিয়ে আসতে হলে শিক্ষকদের অন্তরিক হতে হবে। শিক্ষক অভিভাবক মেলবন্ধন তৈরী করতে হবে। দুর্বল শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করে তাদের ফলোআপ করতে হবে। প্রতি ৩ মাস অন্তর জিবির প্রতিনিধি, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সমন্বয়ে কমিটি করে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করতে হবে বলে মনে করেন শিক্ষাবিদগণেরা।