
চার দিন ধরে হাসপাতালে পড়ে থাকা নাম-না-জানা ব্যক্তি, খোঁজ নেই স্বজনদের!
01/01/1970 12:00:00মাসুদ রানা, মোংলা
বাগেরহাটের মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিঁড়ির পাশে পড়ে আছেন এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি। বয়স আনুমানিক ৫০ বছর। চার দিন পেরিয়ে গেলেও কেউ জানে না তার নাম, পরিচয় বা কোথা থেকে এসেছেন তিনি।
গত ৫ অক্টোবর (রবিবার) বিকেলে স্থানীয় কিছু ব্যক্তি মোংলা বাসস্ট্যান্ডের পাশ থেকে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। হাসপাতালে ভর্তির সময় তাকে খুলনা মেডিকেলে পাঠানোর পরামর্শ দেওয়া হলেও এখনো তিনি একই জায়গায় পড়ে আছেন।
বুধবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের বারান্দার এক পাশে অর্ধচেতন অবস্থায় কাতরাচ্ছেন তিনি। মুখে কাঁচাপাকা দাড়ি, চোখে হতাশার ছাপ। কথাও বলতে পারছেন না, ঠোঁট নাড়িয়ে কিছু বলার চেষ্টা করছেন। তার গায়ে পরনে শুধু জামা ও প্যান্ট, আর চারপাশে ছোপ ছোপ ময়লা। একপাশে স্যালাইন চলছে, আরেক পাশে পড়ে আছে একটি পাউরুটির প্যাকেট।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, গোলাম মোস্তফা নামে স্থানীয় একজন জামায়াত নেতা ও তার সহযোগীরা প্রথমে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। তারা জানান, বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সকাল থেকেই ওই ব্যক্তি পড়ে ছিলেন, কথা বলতে পারছিলেন না।
উদ্ধারকারীরা তার পরিচয় জানাতে ব্যর্থ হলেও কয়েকটি জায়গায় খবর পাঠানো হয়েছে বলে দাবি করেন। তবে পুলিশ বা সমাজসেবা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এখনও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
গোলাম মোস্তফা অভিযোগ করেন, “আমরা দায়িত্ববোধ থেকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি, ওষুধ ও খাবারও দিয়েছি। কিন্তু হাসপাতাল তার চিকিৎসায় গাফিলতি করছে। চারদিন ধরে স্যালাইন ছাড়া কোনো সেবা দেওয়া হয়নি।”
তবে নার্সদের দাবি, তারা যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন এবং রোগীর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
মেডিকেল অফিসার ডা. মৌসুমী মৌ বলেন, “পরিচয় না থাকায় সীমিত চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা বা ঢাকায় নেওয়া দরকার ছিল।”
এ বিষয়ে মোংলা থানার ওসি মোঃ আনিসুর রহমান বলেন, তিনি বিষয়টি জানতেন না তবে এখন দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন।
সচেতন মহলের মতে, এতদিন ধরে একটি সরকারি হাসপাতালে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি পড়ে থাকলেও প্রশাসন বা সমাজসেবা বিভাগের কোনো সাড়া না পাওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক। তার পরিচয় নিশ্চিত করতে এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে সংশ্লিষ্টদের দ্রুত উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয়রা।