
লবণাক্ত জমিতেও সম্ভব! মিষ্টি কুমড়া চাষে কোটিপতি হলেন মোরেলগঞ্জের জলিল তালুকদার
01/01/1970 12:00:00স্টাফ রিপোর্টার
বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের উপকূলবর্তী মোরেলগঞ্জে লবণাক্ত জমিকে সোনার ফসলের মাঠে রূপান্তর করে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন আব্দুল জলিল তালুকদার। তিনি মূলত মুন্না ডেকরেটরের মালিক, তবে কৃষির প্রতি ভালোবাসা থেকেই ডেকরেটরের ব্যবসার পাশাপাশি শুরু করেন হাইব্রিড জাতের মিষ্টি কুমড়া, চাল কুমড়া, শসা ও করলার চাষ।
আর আজ সেই উদ্যোগই তাঁকে এনে দিয়েছে কোটিপতির স্বীকৃতি।
মোরেলগঞ্জ উপজেলার ভাষাডল গ্রামে তার মৎস্য ঘেরের ভেড়িতে লবণাক্ত জমিতে চাষ করা মিষ্টি কুমড়ার স্বাদ এতটাই ভালো যে রাজধানী ঢাকা, কাওরান বাজার থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে।
এখন তাঁর দেখাদেখি আশপাশের অন্তত ৩০টি গ্রামের কৃষকরাও মিষ্টি কুমড়া চাষে ঝুঁকছেন।
গ্রামের মাঠজুড়ে এখন সবুজ পাতায় ঘেরা কুমড়ার মাচা, আর নিচে ঝুলছে হাজার হাজার মিষ্টি কুমড়া। একেকটি কুমড়ার ওজন ১ কেজি থেকে ২৫ কেজি পর্যন্ত হয়। পুরো উপজেলায় প্রায় কয়েক হাজার টন কুমড়া উৎপাদিত হয়েছে, যার বাজারমূল্য দাঁড়িয়েছে আনুমানিক ২ থেকে ৩ কোটি টাকা।
কেজিতে বিক্রি হচ্ছে মাঠেই
প্রতিটি কুমড়া ও ওজনভেদে ৬০ থেকে ৮০ টাকা, আর কেজিপ্রতি দাম ২৫ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। মাঠ থেকেই পাইকাররা ট্রাকে করে এসব সবজি নিয়ে যাচ্ছেন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।
কৃষি প্রযুক্তির সফল প্রয়োগ
কৃষক ও কৃষি অফিসের মতে, আধুনিক প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ কাজে লাগিয়ে চাষিরা সফলভাবে সবজি উৎপাদন করতে পারছেন। মোরেলগঞ্জে এখন সারা বছরজুড়েই সবজি উৎপাদিত হচ্ছে।
মোরেলগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির বলেন, “সরকার ও বিভিন্ন সীড কোম্পানি কৃষকদের বীজ ও সার দিয়ে সাহায্য করলে আরও বেশি কৃষক এই পথে এগিয়ে আসবে।”
কৃষি অফিসের পরিকল্পনা
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম জানান, “মৎস্য ঘেরের ভেড়িতে সবজি চাষে সহায়তার জন্য বিশেষ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ২০৫ হেক্টর জমিতে ২০০ চাষিকে বীজ, সার ও কীটনাশকসহ নানা কৃষি উপকরণ সরবরাহ করা হয়েছে।”
এই উদ্যোগ কেবল ব্যক্তিগত সাফল্যের উদাহরণ নয়, বরং একটি অঞ্চলভিত্তিক কৃষি বিপ্লবের সূচনা, যা দেশের অন্য প্রান্তের চাষিদের জন্যও এক অনুপ্রেরণা।