
বাগেরহাটে জেলাজুড়ে বিক্ষোভ, প্রশাসনিক ভবনে ঘেরাও
01/01/1970 12:00:00স্টাফ রিপোর্টার
নতুন নির্বাচনী সীমানা নির্ধারণে চারটি আসনের স্থলে তিনটি আসন করায় বাগেরহাট জেলায় চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। এর প্রতিবাদে রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে জেলাজুড়ে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতাকর্মীরা অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন।
বৃষ্টি উপেক্ষা করে সকালের শুরুতেই তারা জেলাপ্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন। এরপর একটি মিছিল বের হয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার দপ্তরের সামনে গিয়ে অবস্থান নেয়। বিক্ষোভকারীরা নির্বাচন কর্মকর্তার প্রধান ফটক বন্ধ করে দেন এবং চারটি আসন পুনর্বহালের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
এছাড়া জেলার ৯টি উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় এবং স্থানীয় নির্বাচন অফিসগুলোতেও একইভাবে ঘেরাও ও অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, বিকেল পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে।
🗣️ বক্তব্য:
প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন—
-
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট ওয়াহিদুজ্জামান দীপু
-
সাবেক জেলা সভাপতি এম এ সালাম
-
বিএনপি জেলা সদস্য সচিব মোজাফফর রহমান আলম
-
যুগ্ম আহ্বায়ক খাদেম নিয়ামুন নাসির
-
জামায়াতে ইসলামীর জেলা সেক্রেটারি শেখ মোহাম্মদ ইউনুস
-
জামায়াত নেতা অ্যাডভোকেট আব্দুল ওয়াদুদ
-
জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি ফকির তারিকুল ইসলাম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, “নির্বাচনী আসনের এই অযৌক্তিক সীমানা পরিবর্তন বাগেরহাটবাসী কোনোভাবেই মেনে নেবে না। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।”
অ্যাডভোকেট দীপু জানান, বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালতে রিট দায়েরের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে এবং আগামী সপ্তাহেই শুনানির আশা করা হচ্ছে।
🗳️ পটভূমি:
গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি বাদ দিয়ে তিনটি আসন রাখার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
এরপর থেকেই বাগেরহাটের সাধারণ মানুষসহ রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। চারটি আসন বহালের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতেও সক্রিয়ভাবে অংশ নেন এলাকাবাসী।
তবুও ৪ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত চূড়ান্ত গেজেটে বাগেরহাটকে তিনটি আসনে ভাগ করে নির্বাচন কমিশন তার সিদ্ধান্ত বহাল রাখে, যা আন্দোলনকারীদের মতে জনমতকে সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করে গৃহীত হয়েছে।
📌 নতুন আসন বিন্যাস (গেজেট অনুযায়ী):
-
বাগেরহাট-১: বাগেরহাট সদর, চিতলমারী, মোল্লাহাট
-
বাগেরহাট-২: ফকিরহাট, রামপাল, মোংলা
-
বাগেরহাট-৩: কচুয়া, মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা
📌 পূর্বের আসন বিন্যাস ছিল:
-
বাগেরহাট-১: চিতলমারী, মোল্লাহাট, ফকিরহাট
-
বাগেরহাট-২: বাগেরহাট সদর, কচুয়া
-
বাগেরহাট-৩: রামপাল, মোংলা
-
বাগেরহাট-৪: মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা
বাগেরহাটের মানুষ এই দীর্ঘদিনের আসন বিন্যাসে অভ্যস্ত। হঠাৎ করে এই পরিবর্তন রাজনৈতিক ও সামাজিক ভারসাম্যে প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।