
মোংলা বন্দরে টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতালে অচলাবস্থা, পশুর চ্যানেলে আটকে শত শত পণ্যবাহী জাহাজ
01/01/1970 12:00:00মোংলা প্রতিনিধি
বাগেরহাট জেলার চারটি সংসদীয় আসনের পুনর্বিন্যাসের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েছে এলাকাবাসী। মোংলা-রামপাল সহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোর প্রতিনিধিত্ব সংকুচিত করার প্রস্তাবের প্রতিবাদে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির ডাকে ৫ দিনের হরতাল কর্মসূচির অংশ হিসেবে চলমান ৪৮ ঘণ্টার টানা অবরোধে অচল হয়ে পড়েছে মোংলা সমুদ্র বন্দর।
এই অবরোধে মোংলা ইপিজেড, ইকোনমিক জোন সহ প্রায় ৫৩টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানে কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। পশুর চ্যানেলের বাহির নোঙর, হারবাড়িয়া, ভ্যাসক্রিকি ও জেটি এলাকায় অবস্থান করছে শত শত পণ্যবাহী জাহাজ। মূলত নৌচলাচল বন্ধ থাকায় জাহাজগুলো পণ্য নামিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠাতে পারছে না। ফলে বন্দরের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।
সড়কপথেও পড়েছে ব্যাপক প্রভাব। মোংলা-খুলনা মহাসড়ক ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে টায়ার জ্বালিয়ে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে যান চলাচল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। ফলে স্কুলগামী শিক্ষার্থী, অফিসগামী কর্মী, গার্মেন্টস শ্রমিকসহ সর্বস্তরের মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
দ্বিগরাজ, মোংলা কলেজ মোড়, হাসপাতাল ঘাট, কুমারখালী সহ প্রায় ১৮টি জায়গায় হরতাল বাস্তবায়ন করছে সর্বদলীয় নেতাকর্মীরা। নদী পারাপার ও দুরপাল্লার বাস চলাচলও সম্পূর্ণ বন্ধ। ইপিজেডের গার্মেন্টস, পৌরসভা অফিস এবং সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
ব্যবসায়ীরা দোকানে তালা ঝুলিয়ে হরতাল পালন করছে। স্কুলে যাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা। শ্রমিকরা নদী পার হতে না পারায় কর্মস্থলেও পৌঁছাতে পারছে না। এসব কারণে মোংলার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড এক প্রকারে স্থবির অবস্থায় পৌঁছেছে।
জেলা সর্বদলীয় কমিটির আহ্বায়ক কৃষিবিদ শামিমুর রহমান শামিম বলেন, “৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন বাগেরহাটের একটি আসন অন্যত্র স্থানান্তরের প্রস্তাব দিলে, পুরো জেলায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। মোংলা বন্দরকে অচল করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে বলে আমরা মনে করছি। নির্বাচন কমিশন যদি এই অন্যায় সিদ্ধান্ত থেকে না সরে, তাহলে আগামী শনিবার থেকে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এই আন্দোলনের কারণে যদি কোনো বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়, তাহলে এর দায় সম্পূর্ণভাবে নির্বাচন কমিশনকেই নিতে হবে।”