Logo
table-post
৪৮ ঘণ্টার হরতাল: অচল মোংলা বন্দর ও জেলা প্রশাসন
01/01/1970 12:00:00

স্টাফ রিপোর্টার

বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখার দাবিতে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির ডাকে বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) ভোর থেকে শুরু হওয়া ৪৮ ঘণ্টার টানা হরতালের প্রথম দিনেই অচল হয়ে পড়েছে পুরো জেলা ও দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর মোংলা।

হরতালের ফলে জেলার প্রতিটি সড়ক-মহাসড়কে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। মোংলা বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে, ফলে বন্দর ও আশপাশের শিল্পাঞ্চল কার্যত বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। সকাল থেকেই পিকেটাররা জেলা নির্বাচন অফিস ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়ায় কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী অফিসে ঢুকতে পারেননি।

জেলার মোরেলগঞ্জ, মোংলা, শরণখোলা ও ফকিরহাটসহ সব উপজেলায় হরতালের ব্যাপক প্রভাব দেখা গেছে। দোকানপাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক-বীমা, ও সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। মোংলা নদী এবং পানগুছি নদীতে ফেরী চলাচলও বন্ধ থাকায় নদীপথেও যোগাযোগ ব্যাহত।

বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পিকেটাররা টায়ার জ্বালিয়ে, গাছ ফেলে এবং মাছ ধরার জাল দিয়ে সড়ক অবরোধ করেছেন। জেলার অন্তত ৩০টি পয়েন্টে পিকেটিংয়ের মাধ্যমে বাগেরহাটকে দেশের অন্যান্য অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছে।

হরতালে নেতৃত্ব দেন বিএনপির সাবেক এমপি শেখ মুজিবর রহমান, সাবেক সভাপতি এম এ সালাম, অ্যাড. শেখ ওয়াহিদুজ্জামান দিপু, জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা রেজাউল করিমসহ বিএনপি ও জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় নেতারা। এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরাও আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।

জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম বলেন, “বাগেরহাট জেলার ভৌগোলিক গুরুত্ব, জনসংখ্যা ও অর্থনৈতিক অবদান বিবেচনায় চারটি আসনই থাকা উচিত। একটি আসন কমে গেলে জেলার জনগণ নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে।” জেলা জামায়াতের আমীর রেজাউল করিম বলেন, “এটি দলীয় আন্দোলন নয়, এটি জনস্বার্থের আন্দোলন।”

উল্লেখ্য, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবে বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনগুলোর প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন গত ৪ সেপ্টেম্বর গেজেট প্রকাশ করে আসন সংখ্যা কমানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে।

এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বাগেরহাট জেলাজুড়ে উত্তাল হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষ ও রাজনৈতিক নেতারা। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আরও কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে সর্বদলীয় কমিটির পক্ষ থেকে।

হরতালের প্রথম দিনে কোনো সহিংস ঘটনা না ঘটলেও জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে নিরাপত্তা নিশ্চিতে।

@bagerhat24.com