
মোংলা কাঁচা বাজারে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য: ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভে ফেটে পড়ল ক্ষোভ
01/01/1970 12:00:00মাসুদ রানা, মোংলা
মোংলার বৃহত্তম কাঁচা বাজারে দীর্ঘদিনের অনিয়ম, টাকা আত্মসাৎ ও ভূয়া কমিটি গঠনের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা। সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় প্রায় পাঁচ শতাধিক ব্যবসায়ী তাদের দোকানপাট বন্ধ রেখে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে আওয়ামী লীগ নেতা মো. শাহ-আলম তালুকদার ওরফে আলু আলম সমবায় সমিতির সভাপতির পদ ব্যবহার করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। বাজারের সাধারণ সদস্যদের কাছ থেকে দৈনিক সঞ্চয় ও শেয়ারের টাকা উত্তোলন করা হলেও হিসাব দেওয়া হয়নি। শুধু তাই নয়, জোরপূর্বক নিজের আড়ত থেকে মালপত্র কিনতে বাধ্য করতেন ব্যবসায়ীদের। এছাড়া বাজারে সিন্ডিকেট তৈরি করে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করা হতো।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ব্যবসায়ীরা যখন হিসাব চাইতে শুরু করেন, তখন তাদের ওপর বাড়তে থাকে চাপ। এরই মধ্যে বিএনপি নেতা নুরুজ্জামান কালুর সম্পৃক্ততায় নতুন করে আরেকটি কমিটি গঠিত হয়। ব্যবসায়ীদের দাবি, তাদের অজান্তে স্বাক্ষর জাল করে উপজেলা সমবায় অফিসারের সহায়তায় শাহ-আলমকে সাধারণ সম্পাদক এবং কালুকে সভাপতি করে ভূয়া কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
ফলে বাজারে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি হয়। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, সমবায় সমিতির ৫০ লাখ টাকারও বেশি অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে এবং প্রতারণার মাধ্যমে বাজারকে জিম্মি করে রাখা হয়েছে। এ অবস্থার প্রতিবাদে তারা একত্রিত হয়ে সোমবার সকালেই দোকান বন্ধ রেখে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন।
বিক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা জানান, “আমরা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সাধারণ মানুষের কাছে সাশ্রয়ী দামে পৌঁছে দিতে চাই। কিন্তু কিছু নেতা বাজার নিয়ন্ত্রণ করে আমাদের জিম্মি করে রেখেছে। আমরা এর থেকে মুক্তি চাই।”
অন্যদিকে অভিযুক্ত সাবেক সভাপতি শাহ-আলম বলেন, “আমি বিএনপি করতাম, পরে বাধ্য হয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছিলাম। বর্তমানে আবার বিএনপিতে আছি। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সঠিক নয়। সমিতির টাকার হিসাব চাইলে আমি দিতে প্রস্তুত।”
তবে ব্যবসায়ীরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করে বলেন, “ভুয়া কমিটি বাতিল, সমিতির পূর্ণাঙ্গ হিসাব প্রদান ও দ্রুত নতুন নির্বাচন ছাড়া আমরা শান্ত হব না।”