Logo
table-post
বাধাল হাটে সুপারির আগাম মৌসুমে বেচাকেনায় জমজমাট পরিবেশ
01/01/1970 12:00:00

শুভংকর দাস বাচ্চু, কচুয়া

বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলার বাধাল হাটে শুরু হয়েছে আগাম কাঁচা-পাকা সুপারির জমজমাট বেচাকেনা। বাগেরহাট-পিরোজপুর মহাসড়কের পাশে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী এই হাটে সপ্তাহে দুই দিন—রবিবার ও বৃহস্পতিবার—বসছে এক বিশাল সুপারি বাজার, যা ইতিমধ্যেই কৃষক ও খুচরা বিক্রেতাদের মিলনমেলায় রূপ নিয়েছে।

প্রাকৃতিকভাবে লবণ ও মিষ্টি পানির সংমিশ্রণে গঠিত এই এলাকার সুপারিগুলো স্বাদে ও গুণে অতুলনীয়। ‘বাগেরহাটে সুপারি’ নামে খ্যাত এই ফলের বিশেষত্ব থাকায় দেশের উত্তরাঞ্চলের বাজারে রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। চলতি বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন হয়েছে আশাতীত, যার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে বাজারমূল্যেও।

রবিবার (৩ আগস্ট )সরেজমিনে বাধাল হাট ঘুরে দেখা যায়, সুপারির বস্তা ও ঝাকায় ভরপুর ভ্যান ও ইজিবাইক এসে থেমে যাচ্ছে হাটের একপ্রান্তে। দাম দর হাঁকাহাঁকি চলছে পুরোদমে। খুচরা বিক্রেতা থেকে শুরু করে বড় আড়তদাররা পর্যন্ত জড়ো হয়েছেন ক্রয়ের জন্য। হোগলাপাশা, বনগ্রাম, দাশখালী, কদমতলা প্রভৃতি এলাকা থেকে এসেছে বিপুল পরিমাণ সুপারি।

মালিপাটনের কৃষক তাপস মৃধা বলেন, “এবার ফলন খুব ভালো হয়েছে। সুপারিগুলোর আকারও চমৎকার। বাজারেও ভালো দাম মিলছে।”
অন্যদিকে খুচরা বিক্রেতা আলম শেখ জানান, “আমরা গৃহস্থের কাছ থেকে সুপারি কিনে এনে হাটে বিক্রি করি। প্রতিকুড়িতে (২৩১টি) ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত লাভ হচ্ছে। এখন বাজারদর ৭০০ থেকে ৯০০ টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করছে।”

বাধাল হাটের সুপারি ব্যবসায়ী অসিত দাস বলেন, “আমরা এখান থেকে সুপারি কিনে সরাসরি রংপুরসহ আশেপাশের জেলাগুলোতে পাঠাই। এখন বাজার ভালো। প্রতি বস্তায় ১২ থেকে ২০ কুড়ি পর্যন্ত সুপারি থাকে। প্রতিটি হাটে গড়ে তিন থেকে পাঁচশ বস্তা পর্যন্ত সুপারি কেনাবেচা হচ্ছে, যা দিনদিন বাড়ছে।”

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আকাশ বৈরাগী জানান, “চলতি বছর কচুয়া উপজেলায় ১,২৩২ হেক্টর জমিতে সুপারি চাষ হয়েছে, যা বাগেরহাট জেলার মধ্যে সর্বোচ্চ। ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকদের আগ্রহও বেড়েছে। আমরা নিয়মিত কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।”



বাধাল হাটের আগাম সুপারি বাজার শুধু কচুয়া উপজেলার নয়, বরং সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের একটি কৃষিভিত্তিক অর্থনৈতিক সম্ভাবনার কেন্দ্রস্থল হিসেবে গড়ে উঠছে। কৃষকদের পরিশ্রম আর প্রাকৃতিক অনুকূলতার ফলে এবার সুপারি চাষে এসেছে প্রত্যাশিত সাফল্য।

@bagerhat24.com