
ফকিরহাটে প্রবল বর্ষনে ভেসে গেছে কয়েক হাজার মৎস্য ঘের, সর্বশান্ত চাষীকুল
01/01/1970 12:00:00ফকিরহাট প্রতিনিধি
ফকিরহাটে তিনদিনের প্রবল বর্ষণে প্রায় ৯০ ভাগ মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে চিংড়ি ও সাদা মাছ ভেসে যাওয়ায় সর্বশান্ত হয়ে পড়েছেন কয়েক হাজার মৎস্য চাষিরা। এই বিপদের মুহুর্তে মৎস্য বিভাগ পাশে নেই বলেও অভিযোগ করেছেন অধিকাংশ মৎস্য চাষিরা।
জানা গেছে, গত কয়েকদিনের প্রবল বর্ষনের কারনে উপজেলার মূলঘর, নলধা-মৌভোগ ও শুভদিয়া ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। একাধিক মাছ চাষীরা জানান, তিন দিন ধরে টানা অতিরিক্ত বর্ষণে ও জলবদ্ধতায় উপজেলার ৯০ভাগ মাছের ঘের তলিয়ে মাছ ভেসে গেছে। কোন কোন ঘেরে নেট দিয়ে মাছ আটকে রাখার চেষ্টা করতে দেখা গেছে।
উপজেলার ভৈরব, চিত্রা, কালীগঙ্গা সহ বিভিন্ন নদী ও খালে জাল ফেলে ঘের থেকে বের হয়ে যাওয়া মাছ ধরছে অধিকাংশ জনসাধারন। মাছ চাষ ও বিপনন কাজের সাথে জড়িত শেখ মনিরুজ্জামান মনি ও হারুন মল্লিক সহ একাধিক ব্যক্তিরা জানান, ঘেরের প্রতি বিঘা জমির হাড়ি (ভাড়া), প্রন্তুত ও মাছ দিতে গড়ে এক থেকে দেড় লাখ টাকার বেশি খরচ হয়।
উপজেলায় সাধারণত ১ বিঘা থেকে শুরু করে ৩০ বিঘা পর্যন্ত ঘের রয়েছে। ফলে ক্ষতির পরিমান শত কোটি টাকার বেশি হবে। অনেক চাষি ঋণ নিয়ে মাছ চাষ করেছে। চলতি মৌসূমে দুইদুই বার প্রবল বর্ষণে মাছ ভেসে যাওয়ায় সর্বশান্ত হয়ে পড়েছেন মৎস্য চাষিরা।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মর্কর্তার অফিস থেকে দেওয়া তথ্য মতে, ফকিরহাটে ৩ হাজার ২১০টি বানিজ্যিক মাছের ঘের ও পুকুর ডুবে গেছে। এতে ক্ষতি হয়েছে প্রয় ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। কিন্তু চাষিরা এ তথ্যকে মনগড়া বলেছেন।
মাছ চাষি শুভ শেখ, বাবু ফকির, নাদিম মাহমুদ ও হাফিজ সরদার সহ অনেকে জানান, ক্ষতির পরিমান তার চেয়ে তিনগুন হবে। চাষিদের অভিযোগ মৎস্য অফিস থেকে কোন দিক নির্দেশনা না পাওয়ায় তারা হতাশ হয়ে পড়েছেন।
উপজেলার বেশিরভাগ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মাছ চাষের সাথে জড়িত। ফলে মৎস্য ঘের তলিয়ে যাওয়ায় এই এলাকার অর্থনীতিতে দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে বলে জানান মৎস্য বিপননের সাথে জড়িত অনেক ব্যবসায়ীর।
এ ব্যপারে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জ্যোতি কনা দাস জানান, খাল ও নদীর নাব্যতা কমে যাওয়ায় বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন পথ রুদ্ধ হয়েছে। ফলে অতিবৃষ্টিতে মাছের ঘেরগুলো ডুবে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।