Logo
table-post
মোংলায় ধ্বংসের পথে যুব সমাজ : ভয়াবহভাবে বাড়ছে প্রকাশ্য মাদক বিক্রি
01/01/1970 12:00:00

✍️ মাসুদ রানা, মোংলা

বাংলাদেশের দ্বিতীয় সমুদ্রবন্দর মোংলায় এখন মাদক ব্যবসা যেন এক উন্মুক্ত বাণিজ্য। স্থানীয়রা বলছেন, পুলিশের occasional অভিযান ও সভা-সেমিনারে ফল মিলছে না। বরং দিন দিন শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে ইয়াবাসহ নানা ধরনের মরণনেশা।

একসময় গাঁজা, হুইস্কি, বাংলা মদ ও বিয়ারই ছিল প্রধান নেশার মাধ্যম। কিন্তু বর্তমানে ইয়াবা হয়ে উঠেছে মোংলার মাদকের প্রধান চালিকাশক্তি। শহরের অলিগলি, নির্জন ভবন, পরিত্যক্ত এলাকা ও নদীঘাট- সর্বত্রই ছড়িয়ে পড়েছে এই মরণনেশা।

আইনশৃঙ্খলা সভায় সবাই সচেতনতামূলক বক্তব্য দিলেও, বাস্তবে মাদকের বিক্রি ও ব্যবহার থেমে নেই। বরং পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে চলছে সংগঠিত সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ইয়াবার সরবরাহ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, মাদক ব্যবসায়ী ধরলেই শুরু হয় তদবিরের বন্যা। অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন, ফলে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া কঠিন হয়ে পড়ে।

বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, মোংলার রাজ্জাক সড়ক, শ্রমিক আবাসিক এলাকা, বালুর মাঠ, মেরিন ড্রাইভ, মিয়া পাড়া, ও কবরস্থান সংলগ্ন এলাকাসহ অন্তত ৩০টিরও বেশি স্থানে মাদক কেনাবেচা চলে। মোংলা ঘাট, বাজুয়া, জিউধারা, বৌদ্বমারি, রামপাল-পেড়িখালি, বুড়িরডাঙ্গা ও পাকখালি হয়ে কৌশলে ঢুকছে এই মাদক।

অভিভাবকরা বলছেন, মাদক আজ ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে। স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েরা ইয়াবায় আসক্ত হয়ে পড়ছে, মোবাইল জুয়ার আসক্তিও বাড়ছে। কিছু তরুণ ব্যবসায়ী ছদ্মবেশে মাদক বিক্রি করছে, যাদের আচরণে মাদক ব্যবসার ছিটেফোঁটাও বোঝা যায় না।

এদের মধ্যে কেউ কেউ সামাজিকভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত পরিবারের সন্তান, যা পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে।

সম্প্রতি, রাজ্জাক সড়কের এক আলোচিত নারী মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে সংবাদ পরিবেশন করায় সাংবাদিক মাসুদ রানা (রেজা মাসুদ) হুমকি ও অপপ্রচারের শিকার হয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অডিও প্রকাশের পর বিষয়টি আলোচনায় আসে।

মোংলার ইউএনও শারমিন আক্তার সুমী বলেন, মাদক নির্মূলে রাজনৈতিক, সামাজিক এবং প্রশাসনিকভাবে একসঙ্গে কাজ করা প্রয়োজন। তিনি জানান, মোংলাকে মাদকমুক্ত করতে যৌথভাবে অভিযান চালানোর প্রস্তুতি চলছে, যেখানে পুলিশ, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর একত্রে কাজ করবে।

মোংলা থানার ওসি মোঃ আনিসুর রহমান বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশের অবস্থান কঠোর। যেখানেই তথ্য পাওয়া যাবে, তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

🔺 উল্লেখযোগ্য: এই প্রতিবেদনটির দ্বিতীয় পর্বে প্রকাশ করা হবে মোংলার পরিচিত মাদক ব্যবসায়ীদের নাম ও বিস্তারিত তথ্য।

@bagerhat24.com