
মোংলা-ঢাকা আন্তঃনগর ট্রেন চালুর দাবিতে বিক্ষোভ
01/01/1970 12:00:00মোংলা প্রতিনিধি
বন্দর, পর্যটন ও শিল্প নগরী মোংলার রেল স্টেশন হতে 'মোংলা-ঢাকা ও ঢাকা-মোংলা' পথে দুইটি আন্তঃনগর ট্রেন চালুর দাবিতে মোংলায় বিক্ষোভ, মানববন্ধন-সমাবেশ ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদাণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টাঢ মোংলার পৌর মার্কেট চত্বরে 'আমরা মোংলাবাসী'র ব্যানারে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন বন্দর ব্যাবসায়ী, ট্যুর ব্যাবসায়ী, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যাক্তিবর্গ ও স্থানীয়রা।
মানববন্ধন-সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন মোংলা নাগরিক সমাজের সভাপতি পরিবেশযোদ্ধা মোঃ নূর আলম শেখ। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোংলা বন্দর ইষ্টিভিডরস এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র মোঃ জুলফিকার আলী। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মোংলা বন্দর বণিক সমিতির সভাপতি মোঃ হাবিব মাষ্টার, মোংলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি আহসান হাবিব হাসান, সাবেক পৌর কাউন্সিলর আঃ কাদের, পর্যটন ব্যবসায়ী মোঃ আনিসুর রহমান, সুন্দরবন ট্যুর অপারেটর এ্যাসোসিয়েশন'র সদস্য মোঃ এমাদুল হাওলাদার ও মাঝিমাল্লা ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মোংলা একটি আন্তর্জাতিক সমুদ্র বন্দর ও পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে মোংলা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে ক্রমান্বয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। সমুদ্র বন্দর, ইপিজেড, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, শিল্পাঞ্চল এবং সুন্দরবনসংলগ্ন এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও পর্যটন সম্ভাবনা বাস্তবায়নের জন্য আধুনিক ও সরাসরি রেল সংযোগ অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। বর্তমানে মোংলা থেকে ঢাকার সঙ্গে সরাসরি কোনো আন্তঃনগর রেল যোগাযোগ নেই। অথচ মোংলা বন্দরের মাধ্যমে দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্য দ্রুত প্রসারিত হচ্ছে এবং এখানে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, শিল্প পার্ক ও পর্যটনের বিকাশ ঘটছে। এই অবস্থায় মোংলা-ঢাকা ও ঢাকা-মোংলা আন্তঃনগর ট্রেন চালু অপরিহার্য। তাই অবিলম্বে মোংলা-ঢাকা ও ঢাকা-মোংলা দুটি আন্তঃনগর ট্রেন চালুর জোর দাবি জানানো হয় এ মানববন্ধন সমাবেশ থেকে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তাব্যে ইষ্টিভিডরস এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক, সাবেক মেয়র পৌর বিএনপির নেতা মোঃ জুলফিকার আলী বলেন, মোংলা-ঢাকা আন্তঃনগর ট্রেন চালু হলে বন্দরনির্ভর ব্যবসা ও বাণিজ্যে গতি আসবে, যা জাতীয় অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখবে। এছাড়া মোংলা সাথে যদি ঢাকার সাথে সরাসরী ট্রেন যোগাযোগ সম্পুর্ন হয় তবে মোংলা সমুদ্র বন্দর সংশ্লিষ্ট ব্যাবসায়ীরা মোংলা বন্দর ব্যাবহার করতে আরো আগ্রহী হবে।
তারা নিরাপদে মোংলা বন্দর থেকে আমদানী-রফতানীকৃত পন্য সল্প সময় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নিয়ে যেতে পারবে। আবার সঠিক সময় তাদের রফতানীকৃত পন্যও মোংলা দিয়ে বিদেশে রফতানী করতে পারবে। এছাড়া সুন্দরবনের পর্যটকরা অনেক সময় বাস বা অন্যান্য যানবাহনে অনিরাপদে আসতে চায়য় না। তাই ট্রেন হলো নিপাপদ পরিবহন, দেশের ব্যাবসায়ী থেকে শুরু করে দেশের সকল নাগরিক ট্রেনে চলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ মনে করেণ। সে জন্য মোংলা-ঢাকা অন্তঃনগর ট্রেন চালু হলে মোংলা বন্দর ও সুন্দরবন সহ দেশের দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের অর্তনৈতিক চাকা সহ আমুল পরিবর্তন হবে।
মানববনে মোংলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি আহসান হাবিব বলেন, মোংলা-ঢাকা এবং ঢাকা-মোংলা আন্তঃনগর ট্রেন চালু হলে শ্রমজীবী ও সাধারণ মানুষের যাতায়াতে স্বস্তি আসবে, সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে।
সুন্দরবন ট্যুর অপারেটর এ্যাসোসিয়েশনের নেতা মোঃ মোঃ এমদাদুল হাওলাদার বলেন, মোংলা টু ঢাকা এবং ঢাকা টু মোংলা আন্তঃনগর ট্রেন চালু হলে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটবে, বিশেষ করে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন ভ্রমণ সহজ ও নিরাপদ হবে। সভাপতির বক্তব্যে পরিবেশযোদ্ধা মোঃ নূর আলম শেখ বলেন, সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অবিলম্বে মোংলা টু ঢাকা আন্তঃনগর ট্রেন চালুর দাবি জানাই। তিনি আরো বলেন, এই দাবি বাস্তবায়িত হলে আঞ্চলিক যোগাযোগ উন্নত হবে, যা সরকারের ভারসাম্যপূর্ণ উন্নয়ন নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। মানববন্ধন শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।