Logo
table-post
বাগেরহাটে বিশ্ব পরিবেশ দিবসে সনাক’র মানববন্ধন
01/01/1970 12:00:00

স্টাফ রিপোর্টার
বাগেরহাটে সচেতন নাগরিক কমিটির উদ্যোগে বিশ্ব পরিবেশ দিবসে মানববন্ধন পালিত হয়েছে। “প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধে সকলে, একসাথে, এখনই” এই শ্লোগানকে সমানে রেখে এবং প্লাস্টিক দূষণ বন্ধের দাবীতে রবিবার (০১ জুন) দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাব চত্বরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

সনাক সভাপতি আডভোকেট মোঃ শাহ্ আলম টুকু এর সভাপতিত্বে এবং টিআইবি’র এরিয়া কোঅর্ডিনেটর শেখ বশির আহমেদ এর সঞ্চালনায় মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন, পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির আহবায়ক খোন্দকার আছিফ উদ্দিন রাখী। অন্যান্যদের মধ্য বক্তব্য দেন, পরিবেশ অধিদপ্তর বাগেরহাটের উপপরিচালক আসাদুর রহমান, সহকারি পরিচালক দেলোয়ার হোসেন, সংবাদ কর্মী মো: ইয়ামিন আলী, সনাক সহ-সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান, সদস্য বাবুল সরদার, পূরবী রাণী দাস, ব্র্যাক এর জেলা প্রতিনিধি মো: ইদ্রিস আলম, ওয়াদা এর ফোকাল পারসন আল-আমিন সরদার, এসিজি সদস্য অর্ণব মিস্ত্রি, ইয়েস সদস্য মো: মাহমুদ হাসান প্রমুখ।


বক্তাগণ বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত পরিবেশকে ধবংস করছি। কখনো গাছ কেটে, কখনো পাহাড় কেটে, কখনো নদী নালা ভরাট করে আবার কখনো প্লাস্টিক দূষণের মাধ্যমে। এই অপচনশীল প্লাস্টিক দীর্ঘদিন পরিবেশে টিকে থাকে এবং পরবর্তীতে খাদ্য চক্রের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করে ক্যান্সার ও নানা রকম স্বাস্থ্য ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। এই বিপর্যয় থেকে মুক্তি পেতে হলে প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার নিষিদ্ধ করাসহ আইনের কঠোর প্রয়োগ এবং জনসচেতনতার জরুরী। সনাকের দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে মানববন্ধন হতে নিম্নলিখিত সুপারিশসমূহ উত্থাপন করা হয়।


প্লাস্টিক দূষণ রোধ-সংক্রান্ত চুক্তিটি দ্রুততার সাথে সম্পাদন করতে হবে। এক্ষেত্রে, জীবাশ্ম জ্বালানি খাতে স্বার্থের দ্বন্দ্ব-সংশ্লিষ্টদের বাদ দিয়ে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া নিশ্চিতের জোরালো দাবি উত্থাপন করতে হবে। এজন্য, বাংলাদেশসহ সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনকে একত্রে কাজ করতে হবে। চুক্তির আওতায় ২০৪০ সালের মধ্যে প্লাস্টিক তৈরিতে ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার নিষিদ্ধ এবং উৎপাদিত প্লাস্টিক বর্জ্যরে শতভাগ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের দাবি উত্থাপন করতে হবে।
প্লাস্টিক দূষণ রোধ-সংক্রান্ত চুক্তির আওতায় দেশগুলোকে প্লাস্টিক উৎস থেকে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের তথ্য স্বচ্ছতার সাথে নিরূপণ করতে হবে।

সেই তথ্যর ভিত্তিতে এনডিসি’র তথ্য হালনাগাদ ও সংশোধন করে উপস্থাপনের দাবি উত্থাপন করতে হবে;  চুক্তির আওতায় “দূষণকারী কর্তৃক ক্ষতিপূরণ প্রদানের নীতি” বা  Polluter-pays principle এর ভিত্তিতে, প্লাস্টিক উৎপাদনকারীদের অবদান অনুযায়ী দূষণের দায় দূষণকারীকে গ্রহণের বাধ্যবাধকতা আরোপ করতে হবে; ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে প্লাস্টিক দূষণমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে হবে সেই ঘোষণা ২০২৫ সালের আইএনসি সভা থেকে প্রদান করতে হবে; “ন্যাশনাল থ্রিআর স্ট্রাটেজি ফর ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট” কৌশলপত্রটি হালনাগাদ ও সংশোধনসহ পরিবেশ সংক্রান্ত বৈশি^ক প্রতিশ্রুতির আলোকে একটি আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ, পৃথকীকরণ, পুনঃপ্রক্রিয়াজতকরণের ব্যবস্থাসহ একটি আধুনিক ও কার্যকর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতে পরিবেশ অধিদপ্তর, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভাগুলোর কারিগরি ও আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে।


 বর্জ্য ব্যবস্থাপনা-বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং জনসচেতনতা ও প্রচারণামূলক কার্যক্রম বাস্তবায়নে সরকারি-বেসরকরি প্রতিষ্ঠান, উদ্যোক্তা, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, শিক্ষার্থী এবং তরুণসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে; প্লাস্টিক শিল্পের জন্য আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি ও অন্যান্য প্রণোদনা হ্রাস করে পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণকে উৎসাহিত করতে হবে; অপ্রাতিষ্ঠানিক প্লাস্টিক পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকারীদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে অন্তর্ভূক্ত করার লক্ষ্যে একটি দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করতে হবে এবং প্লাস্টিক-সংক্রান্ত অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত থেকে পরিবেশ দূষণ হ্রাস করতে হবে; সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।


বিশেষকরে, ‘উৎপাদনকারীর সম্প্রসারিত দায়িত্ব’ সম্পর্কিত নির্দেশিকাটির ব্যপক প্রচারণা নিশ্চিত করতে হবে; যত্রতত্র প্লাস্টিক ফেলা বন্ধ এবং পরিবেশ দূষণ রোধে সাধারণ জনগণের মধ্যে প্লাস্টিকের নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে; নদী, জলাশয় ও পরিবেশের বিভিন্ন উৎসে থাকা প্লাস্টিক বর্জ্য অপসারণসহ পরিবেশ সুরক্ষা কার্যক্রমে নাগরিক উদ্যোগকে উৎসাহিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরী। প্লাস্টিক দূষণ ও পরিবেশের ক্ষতিসহ সংশ্লিষ্ট অনিয়মের সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠানকে আইনের আওতায় আনতে হবে।

@bagerhat24.com