
মোংলা বন্দরে সাজানো ডাকাতি! চিফ ইঞ্জিনিয়ারের নেতৃত্বে লুটপাট, কোস্টগার্ডের অভিযানে ফাঁস চাঞ্চল্যকর তথ্য
01/01/1970 12:00:00মাসুদ রানা, মোংলা
মোংলা বন্দরে নোঙর করা একটি বাণিজ্যিক জাহাজে সংঘটিত লুটপাটের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। বাংলাদেশ কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের এক অভিযানে আটক হয়েছে তিন জন এবং উদ্ধার হয়েছে চুরি যাওয়া মূল্যবান যন্ত্রাংশ। তবে ঘটনাটিকে সাধারণ ডাকাতি না বলে এটি একটি পরিকল্পিত নাটক বলেই মনে করছে কর্তৃপক্ষ।
২৮ মে বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আবরার হাসান জানান, ২৬ মে রাত সাড়ে ৩টার দিকে বেইস ক্রিক সংলগ্ন নোঙর করা "এমভি সেঁজুতি" নামক একটি বাংলাদেশি জাহাজে ১২ জন অস্ত্রধারী ব্যক্তি প্রবেশ করে। তারা জাহাজের কর্মীদের জিম্মি করে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ লুট করে পালিয়ে যায়।
কোস্টগার্ড দ্রুত অভিযান চালিয়ে পরদিন ২৭ মে তিনজনকে আটক করে এবং উদ্ধার করে ইঞ্জিনের খুচরা যন্ত্রাংশ, বিয়ারিং, ব্যাটারি, চার্জারসহ বিভিন্ন মেশিনারিজ। প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসে, এই ডাকাতির সঙ্গে জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ কিছু নাবিক ও স্থানীয় দুষ্কৃতকারীরা পরিকল্পিতভাবে যুক্ত ছিলেন।
জানা গেছে, জাহাজের অধিকাংশ নাবিক দীর্ঘ ৬-৭ মাস ধরে বেতন পাননি। ফলে অসন্তোষ থেকে কিছু নাবিক দুষ্কৃতকারীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ডাকাতির নাটক সাজিয়ে মালামাল বিক্রির মাধ্যমে অর্থ ভাগাভাগির পরিকল্পনা করেন।
আটক ব্যক্তিরা স্বীকার করে যে, এই চক্রটি চিফ ইঞ্জিনিয়ারের তত্ত্বাবধানে কাজ করত। এমনকি অতীতে আরও কিছু যন্ত্রাংশ একইভাবে বিক্রি করা হয়েছিল। ঘটনার গুরুত্ব বোঝাতে জাহাজের মালিক পক্ষের প্রতিনিধিকে ঘটনাস্থলে আসার অনুরোধ করা হলেও, তারা অপারগতা প্রকাশ করে।
বর্তমানে উদ্ধার হওয়া মালামাল জাহাজ কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে এবং আটক তিনজনকে থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রমও চলমান। কোস্টগার্ড জানিয়েছে, ঘটনার পেছনে থাকা মূল হোতাদের খুঁজে বের করতে তদন্ত অব্যাহত থাকবে।
তারা আরও জানান, জাহাজের মালিক কর্তৃক বেতন বঞ্চনার বিষয়টিও তদন্ত সাপেক্ষে বিচার করা উচিত। কারণ এই পরিস্থিতি পরিকল্পিত অপরাধের পটভূমি তৈরি করেছে।
বাংলাদেশ কোস্টগার্ড স্পষ্টভাবে জানায়, ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধের পুনরাবৃত্তি হলে তারা কঠোরভাবে প্রতিরোধ করবে।