
পশুর চ্যানেলে বাণিজ্যিক জাহাজে তৃতীয়বারের মত ডাকাতি, অস্ত্রের মুখে নাবিকদের বেঁধে মালামাল লুট
01/01/1970 12:00:00মোংলা প্রতিনিধি:
মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলের বেসক্রিক এলাকায় আবারও ডাকাতির শিকার হয়েছে একটি বাণিজ্যিক জাহাজ। সোমবার ভোর রাতে ‘এম.ভি. সেজুঁতি’ নামের বাংলাদেশি পতাকাবাহী একটি পাথরবোঝাই জাহাজে হামলা চালিয়ে নাবিকদের হাত-পা বেঁধে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী তাণ্ডব চালিয়েছে ১৪ জনের একটি সশস্ত্র জলদস্যু দল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভারত থেকে পাথর এনে মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলে অবস্থান করছিল ‘এম.ভি. সেজুঁতি’। এটি পিএনএন শিপিং লাইন্সের মালিকানাধীন এবং শিপিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে আল সাফা শিপিং লাইন্স।
জাহাজটির খুলনা অফিসের ম্যানেজার শরিফ জাহিদুল করিম অমিত জানান, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে কিছুদিন ধরে জাহাজটি চ্যানেলেই নোঙর করে রয়েছে। সেখানে প্রধান অফিসারসহ মোট ৭ জন নাবিক এবং স্টাফ উপস্থিত ছিলেন।
ডাকাতির সময় দস্যুরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ফিশিং ট্রলারে করে এসে জাহাজে ওঠে। এরপর নাবিকদের রশি দিয়ে বেঁধে ফেলে এবং ব্যাপক মারধর করে। লুট করে নেয় জাহাজের গ্র্যাব, ওয়াররোপ, ইঞ্জিনের বেয়ারিং, বিপুল পরিমাণ ডিজেল, মোবিল, খাদ্যদ্রব্য এবং ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন মালামাল।
এ হামলায় জাহাজের তিনজন নাবিক গুরুতর আহত হন এবং তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা শিপিং এজেন্টের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়েছে।
শরিফ করিম বলেন, “এই জাহাজটি ইতিমধ্যে তিনবার ডাকাতির শিকার হয়েছে। সর্বশেষ হামলায় প্রায় অর্ধ কোটি টাকার মালামাল লুটে নেয় দস্যুরা।”
ঘটনার পরপরই মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ, কোস্ট গার্ড এবং পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কোস্ট গার্ড পশ্চিম অঞ্চলের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন অর রশীদ জানান, জলদস্যুদের ধরতে এবং লুটকৃত মালামাল উদ্ধারে অভিযান শুরু হয়েছে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক (বোর্ড ও জনসংযোগ বিভাগ) মো. মাকরুজ্জামান বলেন, “ঘটনার বিষয়ে আমরা অবগত হয়েছি এবং হারবার বিভাগকে জানানো হয়েছে। সব প্রশাসনিক সংস্থাকে জানানো হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।”
এই ধরনের ঘটনায় মোংলা বন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা আবারও সামনে চলে এসেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, জলদস্যুদের দমন ও সমুদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।