Logo
table-post
মোংলায় জেলেদের মাঝে বিকল্প কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে বকনা গরু বিতরণ, অনিয়মের অভিযোগ
01/01/1970 12:00:00

মোংলা প্রতিনিধি

নিবন্ধিত ৩২ জন জেলের মাঝে বিকল্প কর্মসংস্থানের অংশ হিসেবে বকনা গরু বিতরণ করেছে মোংলায় উপজেলা প্রশাসন। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের “মৎস্য অধিদপ্তরের অধিনে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যাবস্থাপনা সাগর ও সুন্দরবনে মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ এবং উন্নয়ন” প্রকল্পের আওতায় (১৫ মে) বৃহস্পতিবার দুপুরে এ সহায়তা প্রদান করা হয়। তবে বকনা গরু বিতরণের অনিয়োমেরও অভিযোগ উঠেছে মৎস্য বিভাগ ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। 

মোংলা মৎস্য অফিস সুত্রে জানায়, বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দুপুরে মোংলা উপজেলা পরিষদ চত্বরে এই বকনা বাছুর বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন মৎস্য বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসন। মোংলা উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ৩২ জন জেলেদের প্রতিজন জেলেকে একটি করে বাছুর প্রদান করা হয়, যাতে তারা মৎস্য আহরণ সরকারী নিষিদ্ধের সময় অন্যান্য কর্মের পাশাপাশি গবাদিপশু পালন করে অতিরিক্ত আয় করতে পারেন। প্রতিটি বকনা গরুর মুল্য ধরা হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। 

তবে এ গরু বিতারণে অনিয়োমের অভিযোগ তুলেছে জেলেদের মরেধ্য অনেকেই। নিবন্ধিত জেলে আজগর আলী বলেন, যে গরু বিতারণ হয়েছে তার মুল্য হবে ১৫ থেকে ২০ হাজারের মধ্যে। এছাড়া অনেক জেলের কাছ থেকে গরুর বিনিময় টাকাও নেয়া হয়েছে। আর যারা গরু পেয়েছে তাদের মধ্যে বেশীর ভাগ জেলে সাগর বা সুন্দরবনে মাছ ধরার সাথে সংশ্লিষ্ট না। যারা প্রকৃত জেলে তাদের বাদ দিয়ে মৎস্য বিভাগের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মনোপুত লোকদের সরকারী এ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিন সুলতানা। তিনি বলেন, “সরকারের লক্ষ্য হলো জেলেদের জীবনমান উন্নয়ন এবং বিকল্প আয়ের সুযোগ সৃষ্টি করা। বঙ্গেপসাগর ও সুন্দরবনে বিভিন্ন সময় ঝাটকা সংরক্ষন, মাছের প্রজনন মৌশুম ও ডিম দেয়ার সময় সরকারী ভাবে মাছ ও কাকড়া আহরণ করা নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়। সে সময়কাল শুধু মাছ ধরার উপর নির্ভর না করে গবাদিপশু পালনের মাধ্যমে তারা একটি টেকসই জীবিকা গড়ে তুলতে পারবেন, সে জন্যই এ সহায়তা দেয়া হয়েছে। তবে সরকারী এ সহায়তায় কেউ যদি অসাদ উপায় অবলম্ভন করে থাকে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যাবস্তা নেয়া হবে। 

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ জাহিদুল ইসলাম বলেন, মোংলায় ৬ হাজার ৭৩৩ জন নিবিন্ধত জেলে রয়েছে। গত দুই বছর এ সহায়তা দেয়া হয়েছে, এ বছরও বকনা গরু বিতারণ করা হয়। ভ্যাট ও অন্যান্য সরকারী নিয়োম সহ ৩০ হাজার টাকা করে ক্রয় করা হয়েছে। আর এর মধ্যে অনিয়োম হওয়ার কোন সুযোগ নাই। আমরা চাই জেলেরা এই সহায়তা সঠিকভাবে ব্যবহার করে নিজেদের জীবনমান উন্নত করুন। এছাড়া “সাগর ও সুন্দরবনে মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য শুধু প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা নয়, বরং যারা এই সম্পদের ওপর নির্ভরশীল, যেমন জেলেরা, তাদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও এর অন্যতম লক্ষ্য।

বকনা বাছুর পেয়ে খুশি জেলেরা। তারা জানান, এই গরুগুলো বড় হলে দুধ বিক্রি ও বংশবিস্তারের মাধ্যমে আয় বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে। এতে তাদের সংসারে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলবে। সরকারি এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে স্থানীয় জনগণও আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে এমন কার্যক্রম আরও বিস্তৃত হবে এবং পর্যাক্রমে নিবন্ধিত সকল জেলেরা এর আওতায় আসবে বলেও জানায় মৎস্য কর্মকর্তা। 

@bagerhat24.com