
কচুয়ায় চরম তাপদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত, হাসপাতালে ভিড়ছে শত শত রোগী!
01/01/1970 12:00:00ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি, জ্বর ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসছে শতাধিক মানুষ।
শুভংকর দাস বাচ্চু, কচুয়া
বাগেরহাটের কচুয়ায় চলমান তীব্র তাপদাহে নাভিশ্বাস উঠেছে সাধারণ মানুষের। প্রতিদিনের জীবনযাত্রা হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ, বিশেষ করে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষদের জন্য। প্রচণ্ড গরমে ভেঙে পড়ছে শরীর, আর সেই সঙ্গে বাড়ছে বিভিন্ন রোগের প্রকোপ।
সোমবার (১২ মে) কচুয়ায় দুপুরে তাপমাত্রা পৌঁছে যায় ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। এই উচ্চ তাপমাত্রা শ্রমিক, কৃষক, ও দিনমজুর শ্রেণির মানুষদের জীবনে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বাড়ছে রোগীর চাপ:
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন গড়ে ২০০ জন রোগী ঠান্ডাজনিত ও পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ভর্তি রয়েছে অন্তত ৫৫ জন, যার মধ্যে ১৫ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। ডায়রিয়া, জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে।
শ্রমজীবীদের দুর্দশা:
বাধাল-আফরা গ্রামের ধান শুকানো শ্রমিক এনামুল পাইক বলেন, “প্রচণ্ড রোদে কাজ করতে গিয়ে জ্বর আর মাথা ব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়েছি।”
মসনী গ্রামের ভ্যানচালক আলম শেখ বলেন, “রাস্তায় না বের হলে আয় হবে না। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রোদে বের হতে বাধ্য হচ্ছি।”
চিকিৎসকের পরামর্শ:
কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডাঃ মনিসংকর পাইক বলেন, “চলমান তাপপ্রবাহে পানিবাহিত রোগ বেড়েছে। খোলা জায়গার শরবত বা খাবার না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সবাইকে পর্যাপ্ত পানি পান, খাবার স্যালাই খাওয়া এবং যতটা সম্ভব ঘরে থাকা উচিত।”
জীবনের তাগিদে ঝুঁকি নিয়ে কাজ:
স্থানীয় নির্মাণ শ্রমিকরা বলছেন, “গরমে মাথা ঘুরে পড়ে যাই, শরীর দুর্বল লাগে। কিন্তু না খাটলে খাব কোথা থেকে?”
বহু কৃষক ও দিনমজুর এখন হিটস্ট্রোকের আতঙ্কে রয়েছেন।
এই অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগকে সচেতন উদ্যোগ নিতে হবে, পাশাপাশি জনসাধারণকেও নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য সচেতনতা মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে।