
বাম্পার ফলনের পরও ধানের দাম কম, লোকসানে কচুয়ার কৃষকরা
01/01/1970 12:00:00উৎপাদন ভালো হলেও বাজারদর কম ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় ধান বিক্রি করে ক্ষতিতে পড়ছেন কচুয়ার চাষিরা
শুভংকর দাস বাচ্চু, কচুয়া:
বাগেরহাটের কচুয়ায় চলতি বোরো মৌসুমে ধানের রেকর্ড পরিমাণ ফলন হলেও বাজারে ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় কঠিন অবস্থায় পড়েছেন কৃষকরা। সংরক্ষণের সুব্যবস্থা না থাকায় ঘরে ওঠা ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন কম দামে। এতে একদিকে যেমন মজুরি তুলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে, অন্যদিকে লোকসানের খাতা ভারী হচ্ছে।
জানা গেছে, উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে প্রায় ৬ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ৫ হাজার ২০০ হেক্টরে হাইব্রিড জাত এবং ১ হাজার ৫০০ হেক্টরে উফশী জাতের ধান চাষ করা হয়েছে। বিশেষ করে বাধাল অঞ্চলে এবার ১ হাজার ২৩০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে, যার বড় একটি অংশ হাইব্রিড ধানে পূর্ণ।
চাষিদের বক্তব্য অনুযায়ী, গত বছরের তুলনায় এবারে ফলন ভাল হলেও কৃষিকাজে শ্রমিকের পারিশ্রমিক প্রতিদিন ৮০০ থেকে ৯৫০ টাকা হওয়ায় এক মন ধান বিক্রি করেও একজন শ্রমিকের মজুরি তোলা যাচ্ছে না। চাষের খরচ, সার, ওষুধ ও শ্রমিক মিলিয়ে প্রতি বিঘাতে (৬২ শতক) খরচ হয়েছে ২৩-২৫ হাজার টাকা। অথচ হাইব্রিড ধান প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৮৫০ থেকে ৯৫০ টাকায়।
স্থানীয় চাষি সুবোধ দাস ও বর্গাচাষি রঞ্জন দাস জানান, নিজেদের চাষ করা জমি না থাকায় তারা অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষ করে থাকেন। ফলন ভাল হলেও বাজারে সঠিক দাম না পাওয়ায় ধারদেনা মেটানোও কঠিন হয়ে পড়েছে।
বাধাল বাজারের ধান ব্যবসায়ী সোবাহান ও জীবন দাস জানান, তাঁরা অটোমিলে ধান বিক্রি করে থাকেন, কিন্তু বাজারে দাম খুবই কম। তাঁদের মতে, সরকার যদি সরাসরি ধান কেনা শুরু করে, তাহলে দাম কিছুটা বাড়তে পারে।
এ বিষয়ে কচুয়া উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা প্রভাষ দাস বলেন, কৃষকদের আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে এবং সার ও বীজ সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, চলতি বছর সরকার প্রতি মণ ধান ১,৪৪০ টাকা দরে কিনবে এবং সরকারি সংগ্রহ প্রক্রিয়া শুরু হলে কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পাবেন।