ভান্ডারিয়ায় দাপুটে যুবলীগ নেতা, ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে অবৈধ অর্থ আয় ও জুলুমের অভিযোগ
01/01/1970 12:00:00ভাান্ডারিয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
পিরোজপুরের ভাান্ডারিয়া উপজেলার পাঁচ নম্বর ধাওয়া ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও যুবলীগ নেতা ফিরোজ হোসেন মুন্সীর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাত। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পিরোজপুরের জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালকের কাছে এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ভূক্তভোগি স্থানীয় পশারিবুনীয়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেন।
বিষয়টি তদন্ত করে দুদককে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। এদিকে গতকাল সোমবার পিরোজপুর সিনিয়ন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মোঃ দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে একটি মামলা করে । মামলাটি তদন্তর জন্য ভান্ডারিয়া থানার অফিসার ইচার্জকে তদন্তের নিদের্শ প্রদান করেন।
লিখিত অভিযোগে জানাগেছে, ধাওয়া ইউনিয়নের যুবলীগ নেতা ফিরোজ হোসেন মুন্সী গত ১৮ বছর ধরে দলের প্রভাব খাটিয়ে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি বিভিন্ন সময় দলের রাজনৈতিক নেতাদের প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘ ১৮ বছরে বিভিন্ন লোকের ঘর , টিউবয়েল, ভিজিডি কার্ড, টিন ও রেশন কার্ড দেওয়া কথা বলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। আবেদনে উল্লেখিত ১৬ জন ভুক্তভোগীর কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও তাঁর একটি আলিশান বাড়ির কথা বলা হয়েছে, যেখানে এরশাদ শিকদারের মত সুরঙ্গ আছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। গত ১৮ বছর যাবৎ আওয়ামী রাজনীতির প্রভাব খাটিয়ে ফিরোজ হোসেন মুন্সী সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে আসছেন বলেও অভিযোগ এলাকাবাসীর।
প্রভাবশালী মেম্বার থাকার সুবাধে অসংখ্য মানুষকে ঘর, টিউবওয়েল, ভিজিডি, বিধবা, রেশন কার্ড, ঢেউটিন সহ নানা ধরনের ত্রাণ সামগ্রী দেয়ার কথা বলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনি ধাওয়া ইউনিয়নের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান ও বর্তমান উপজেলা মেম্বার এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক, তাছাড়া সাবেক সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন মহারাজ এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিরাজুল ইসলামের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় মসজিদ সংস্কার, ঘাটলা নির্মাণ সহ বিভিন্ন প্রকল্প বরাদ্দ পান কিন্তু কোন প্রকার কাজ না করে প্রভাব খাটিয়ে প্রকল্পের অর্থ হাতিয়ে নেন।
নিজস্ব কোন আয়ের বৈধ উৎস না থাকলেও গড়ে তুলেছেন বিলাসবহুল বাড়ি যা দেখলে যে কারোরই মনে হবে এটা কোন এমপি বা মন্ত্রীর বাসভবন কিন্তু তা বাড়ির বাইরে থেকে বোঝার কোন উপায় নেই।
ভূক্তভুগী ঝালমুড়ি বিক্রেতা মো. ফোরকান খান বলেন, আমার বাবা মৃত্যুর পর আমার মাকে বিধবা ভাতার কার্ড করে দেয়ার কথা বলে ১৫শত টাকা নেয় আজ ৪ বছরের বেশি সময় ধরে ঘুরাচ্ছে। কার্ড তো দুরের কথা টাকা চাইতে গেলে উল্টো মারধরের হুমকি দেয় ফিরোজ।
অন্য এক ভুক্তভোগী মো. ছগির খান বলেন আমি একজন অসহায় হতদরিদ্র মানুষ আমাকে একটা ঘর দিবে বিনিময়ে আমার কাছে ৩০ হাজার টাকা দাবি করলে আমি ঘরের আসায় সুদে এনে ১৮ হাজার টাকা মেম্বারকে দেই আজ ৬ বছর ধরে আমার সাথে প্রতারণা করে যাচ্ছে । ঘরতো দূরে থাক টাকা চাইলে আমাকে নানাভাবে হয়রানি করার হুমকি দেয় ফিরোজ । আমি এখনো সেই টাকায় সুদ দিয়ে আসছি মূল টাকা পরিশোধ করতে পারিনি, আমি তার বিচার চাই।
এদিকে গতকাল সোমবার পিরোজপুর সিনিয়ন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মোঃ দেলোয়ার হোসের বাদী হয়ে একটি মামলা করে । মামলাটি তদন্তর জন্য ভান্ডারিয়া থানার অফিসার ইচার্জকে তদন্তের নিদের্শ প্রদান করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ফিরোজ মুন্সি মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে এবং তারি বাড়িতে উপস্থিত হলে তিনি মিডিয়ার লোকের পরিচয় পাওয়া মাত্র পালিয়ে যায়।
অভিযোগের বিষয়ে দুদকের পিরোজপুর জেলা কার্যালয়ের উপ -পরিচালক শেখ গোলাম মাওলা বলেন, এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তবে মানুষের কাছে যে অর্থ নিয়েছে সে বিষয় প্রমান করা কঠিন। তবে অবৈধ আয়ে বাড়ি নির্মাণ করে থাকলে তার বিরুদ্ধে মানিলণ্ডারিং আইনে মামলা হতে পারে । অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে সত্যাতা পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।