
ছেলেকে সৌদির বিমানে তুলে দিতে গিয়ে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরলেন বাবা
01/01/1970 12:00:00মাসুম বিল্লাহ ,ভান্ডারিয়া
রাজধানীর শাহজাদপুরে মজুমদার ভিলা নামের একটি বহুতল ভবনের দোতলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায়নিহত শহীদুল ইসলাম মিরন জমাদ্দার(৬০) ছেলে মুনিম জমাদ্দার(২৫)কে সৌদিআরব পাঠাতে ফ্লাইটে তুলে দিতে রবিবার ঢাকায় গিয়েছিলেন। তার সঙ্গে ছিলেন মুনিম এর মামা হিরন তালুকদার। তারা তিনজন ওই ভবনের ষষ্ঠতলায় সৌদিয়া নামে একটি হোটেলে অবস্থান করছিলেন । মুনিম তার মামা হিরনকে নিয়ে সকালে নাস্তাআনতে যাওয়ার পর ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে । এসময় শহীদুল ইসলাম মিরন জমাদ্দারসহ হোটেলে অবস্থানরত চারজন মারা যান।
নিহত বৃদ্ধ শহীদুল ইসলাম মিরনের আজ তার ছেলেকে সৌদি পাঠাতে বিমানে তুলে দেওয়ার কথা। কিন্তু তিনি আজ মঙ্গলবার সকালে লাশ হয়ে গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসেন। নিহত শহীদুল ইসলাম মিরন জমাদ্দারের লাশ পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া উপজেলার দারুলহুদা গ্রামে জানাজাশেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পরিবারে শোকের মাতম চলছে।
নিহত শহীদুল ইসলাম এর শ্যালক হিরন তালুকদার জানান, আজ মঙ্গলবার সকালে ভাগ্নে মুনিম তালুকদারকে বিমানে তুলে দিতে তারা তিনজন মিলে গত রবিবার ঢাকায় যান। তারা তিনজন ওই ভবনের ষষ্ঠতলায় সৌদিয়া নামে একটি হোটেলে অবস্থান ওঠেন। মুনিম ও তার মামা হিরন সোমবার সকালে হোটেল থেকে বেরিয়ে সকালের নাস্তা আনতে যাওয়ার পর ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে ।
এসময় তারা হোটেলে অবস্থানরত মিরন জমাদ্দারকে ফোন দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসতে বলেন। কিন্তু অগ্নিকাণ্ডে সৃষ্ট ধোঁয়ার কারণে ওই ভবনের ষষ্ঠ তলা থেকে আর সে বের হয়ে পারেননি। পরে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা তার লাশ উদ্ধার করে। এসময় আরও তিনজনের লাশও উদ্ধার করা হয়।
তিনি জানান, ধোঁয়ার তীব্রতা থেকে রক্ষা পেতে তাঁরা ছাদে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তবে ওই সময় ছাদের দরজা তালাবদ্ধ ছিল। এ কারনে তার মৃত্যু ঘটে। পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিহত বৃদ্ধ মিরন জমাদ্দার এর লাশের ময়নাতদন্ত শেষে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।
স্থানীয় সহকারি যুবউন্নয়ন কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেন বলেন, ছেলে বিমানে তুলে দিতে গিয়ে লাশ হয়ে বাবার বাড়ি ফিরে আসা খুবই মর্মান্তিক । নিহত বৃদ্ধের স্ত্রী গত তিনবছর বছর আগে আগে মারা যায়। একমাত্র ছেলের কর্মসংস্থানের জন্য বহু কষ্টে তাকে সৌদিআরব পাঠাতে বিমানে তুলে দিতে তিনি গিয়েছিলেন। তার মৃত্যুতে পরিবারটি এখন অসহায় অবস্থায় পড়েছে।
এ ব্যাপারে ভাণ্ডারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইয়াছিন আরাফাত রানা বলেন, পরিবারটি এমন অসহায় অবস্থা দু:খজনক। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে খোঁজ নিয়ে সহযোগিতা করা হবে।