
চিতলমারীতে ভারপ্রাপ্তে ভারাক্রান্ত অর্ধশত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
01/01/1970 12:00:00চিতলমারী প্রতিনিধি
চিতলমারীতে দীর্ঘদিন ধরে ৪২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৩টি কলেজ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এবং অধ্যক্ষ দিয়ে চলছে। এছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৭ টি সহকারি শিক্ষক ও ৭০টি দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরীর পদ শূণ্য রয়েছে। ফলে শিক্ষক ও জনবল ঘাটতির কারণে এসব স্কুল-কলেজে শিক্ষা ও একাডেমিক কার্যক্রম মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। দিনেপর দিন এভাবে চলায় ভারপ্রাপ্তের ভারে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিস ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৭ ইউনিয়নে ১১১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩২ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৭ টি আলিয়া মাদ্রসা ও ৪টি কলেজ রয়েছে। যার ১১১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪২টি চলছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬৩৭টি শিক্ষক পদের বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন ৫৭৮ জন শিক্ষক।
এরমধ্যে ৪২ জন প্রধান শিক্ষক ও ১৭ জন সহকারি শিক্ষকের পদ শূণ্য রয়েছে। চারটির কলেজের মধ্যে তিনটি কলেজ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও ৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে চলছে। আর কবে নাগাদ গুরুত্বপূর্ণ এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভারমুক্ত হবে তাও কেউ স্পষ্ট করে বলতে পারছেন না।
নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানা গেছে, গত এক বছর আগে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে পদোন্নতি দেওয়ার জন্য জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে ৭০ জন সহকারি শিক্ষকরে একটি তালিকা প্রস্তুত করা হয়। তাদের মধ্যে থেকে খালি হওয়া প্রধান শিক্ষকের পদ গুলোতে নিয়োগ দেওয়া কথা থাকলেও অদ্যবধি তা দেওয়া হয়নি।
শ্যামপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. সাফায়েত হোসেন, শিবপুর সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক কাজী কামরুল ইসলাম, বোয়ালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক খোকন মন্ডল, পিরেরআবাদ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক বিপ্লব মন্ডল ও কলিগাতী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক অমর কান্তি জানান, প্রধান শিক্ষকের পদ শূণ্য হলে একজন সহকারী শিক্ষককে ওই পদে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে হয়; না করলে প্রশাসনিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়। তবে দাপ্তরিক কাজ করতে গিয়ে নিয়মিত পাঠদান চালানো সম্ভব হয় না। এতে বাকি শিক্ষকদের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে যায়। ফলে প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এছাড়া পদোন্নতি না পাওয়ায় অন্যান্য সহকর্মিরা অনেক সময় নির্দেশ মানতে চান না। তাই শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করতে প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষক দ্রুত নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন।
অবিভাবক সুবল কর্মকার জানান, সুষ্ঠুভাবে শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার স্বার্থে স্কুল গুলোতে জরুরি ভিত্তিতে প্রধান ও সহকারি শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া দরকার।
চিতলমারী উপজেলা (মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের) একাডেমিক সুপার ভাইজার প্রদীপ কুমার ভৌমিক বলেন,‘প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষর পদ শূণ্য হওয়া প্রতিষ্ঠান গুলোতো প্রতিষ্ঠান প্রধান নিয়োগের কোন নির্দেশন আপাতত নেই। উর্ধতন কর্তৃপক্ষ নির্দেশ দিলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করব’
চিতলমারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা অচ্যুতানন্দ দাস জানান, অবসরজনিত কারণে উপজেলার ৪২ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। উপর মহলের নির্দেশনা পেলে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা করা হবে।