রামপালে ভুয়া সাংবাদিককে গণধোলাই

বাগেরহাটের রামপাল উপজেলায় এক ভুয়া সাংবাদিককে এলাকাবাসী গণধোলাই দিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সে মোল্লাহাট উপজেলার চাকদাহ গ্রামের রাজ্জাক শেখের পুত্র।

স্থানীয়রা জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১ টায় উপজেলার গিলাতলা বাজারের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মোঃ হাফিজুর রহমানে স্ত্রী তিনজন মহিলাকে পবিত্র কোরআন শিক্ষা দিচ্ছিলেন। ওই সময় ফয়সাল ও তার সহযোগী ইকরামুল হক রাজিব ইমামের বাসায় ঢুকে মহিলাদের কোরআন শিক্ষার ভিডিও ধারণ করেন। পরে মসজিদের ইমামের স্ত্রীর কাছে নানান প্রশ্ন করে বলেন, করোনায় সরকারি বিধিনিষেধ অমান্য করে কেনো আপনি এই ভাবে বাসায় কোরআন শিক্ষা দিচ্ছেন? আপনার বিরুদ্ধে রিপোর্ট করবো বলে হুমকি দেন। পরে ইমাম সাহেবের কাছে একহাজার টাকা দাবি করেন ফয়সাল ও তার সহযোগী রাজিব। টাকা দিতে অস্বীকার করলে প্রশাসনের ও রিপোর্ট করবে বলে নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে কৌশলে তাদের কাছ থেকে একহাজার টাকা নিয়ে দ্রুত কেটে পড়েন তারা।

বিষয়টি এক পর্যায় জানাজানি হলে এলাকাবাসী চরম ক্ষোভে ওইদিন বিকেলে ফয়সালের সহযোগী রাজিবকে গিলাতলা বাজারে গণধোলাই দেয়। পরে শনিবার বিকালে কথিত ওই সাংবাদিক ফয়সাল আবার গিলাতলা বাজারে আসলে জনগণ তাকে গণধোলাই দিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখে। অবশেষে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের কাছে ক্ষমা চেয়ে ভবিষৎতে আর এমন কাজে লিপ্ত হবে না মর্মে মুক্তি মেলে কথিত ওই সাংবাদিক ফয়সালের।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, সে মূলত একজন প্রতারক ও চাঁদাবাজ। মূলধারার কোনো সাংবাদিক নয়। ভুঁইফোড়া অনলাইনের আইডি কার্ড ও বুম দেখিয়ে প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজি করে আসছিলো।

এ বিষয় গিলাতলা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মোঃ হাফিজুর রহমানের কাছে তার মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি ঘটনা স্বীকার করে বলেন, সামাজিক দূরত্ব মেনে মাত্র তিনজন মহিলাকে বাসায় পবিত্র কোরআন শিক্ষা দিচ্ছিলেন আমার স্ত্রী। কিন্তু বৃহষ্পতিবার সকাল সাড়ে ১১ টার সময় ফয়সাল ও তার সহযোগী রাজিব বাসায় ঢুকে কোরআন পাঠ এর ভিডিও ধারণ করে আমাদের নানান প্রশ্ন ও রিপোর্ট করবে বলে ভয়ভীতি দেখিয়ে বাগেরহাট থেকে আসা যাওয়ার খরচ বাবদ এক হাজার টাকা দাবি করেন। আমরা ভয়ে তাদের এক হাজার টাকা দেই। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়রা বৃহষ্পতিবার বিকালে ফয়সালের সহযোগী রাজিবকে গণধোলাই দেয় এবং আজ আবার ফয়সাল গিলাতলা বাজারে আসলে জনগণ তাকে অবরুদ্ধ করে গণধোলাই দেয়।

এ বিষয়ে রামপাল থানার ওসি মোঃ সামসুদ্দীন মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টি আমার নলেজে নেই তবে অভিযোগ পেলে ওইসব ভুয়া সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।