পানি উন্নয়ন বোর্ডের জরুরী হস্তক্ষেপ প্রয়োজন

ফকিরহাটে লবণ পানি ঢুকে ধানের ব্যাপক ক্ষতির আশংকা

পি কে অলোক.ফকিরহাট

আপডেট : ০৩:৩০ পিএম, রোববার, ১১ এপ্রিল ২০২১ | ৮০৫

ফকিরহাটের লখপুরের খাজুরা এলাকায় অবস্থিত পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্মিত ৬ গেট ও ১০ গেটের অধিকাংশই পাটা নষ্ট ও অকেজো হয়ে পড়ায় জোয়ারের লবণ পানি হু হু করে ঢুকে পড়তে শুরু করেছে। ফলে হাজার হাজার একর জমির রোপা বোরো ধানের ব্যপক ক্ষতির আশংকা করা হচ্ছে। ৬ গেট ও ১০ গেটের ভেঙ্গে যাওয়া পাটাগুলি দ্রুত মেরামত বা সংস্কার করা না হলে জোয়ারে ঢুকে পড়া লবণ পানিতে প্রায় ২০হাজার কৃষকের রোপা বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য স্থানীয় কৃষকরা দ্রুত পানি উন্ন্য়ন বোর্ডের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

জানা গেছে,খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলার নিমান্তবর্তী নারায়নখালী ও ফকিরহাটের লখপুরের ভট্টখামার এলাকার পশর নদীর উপরে নির্মিত এই ৬ গেট অবস্থিত। ৬ গেটের উপরী পশর নদীটি ভবনা মাসকাটা চাকুলী গৌরম্বা রামপাল হয়ে বাজুয়ার চালনা নদীতে মিশে গিয়েছে। এই নদীর পাশের্^ ভবনা বিল, মিনেদা বিল, মাসকাটা বিল, চাকুলী বিল, আমিরপুর বিল, ভান্ডারকোট বিল সহ অর্ধশতাধিক বিল রয়েছে। যে বিলে হাজার হাজার হেক্টর জমিতে কৃষকরা বোরো ধানের আবাদ করেছেন। বাম্পার ফলন ও হয়েছে । সেই বিলের উপরী অংশে ৬ গেট অবস্থিত থাকায় সেই গেট দিয়ে সকল এলাকার পানি এই স্থান দিয়ে সরবরাহ হয়ে থাকে। স্থানীয়রা বলেছেন, চলতি গোনে জোয়ারের সময় নদীর পানি এই খালে প্রবেশ করে। কিন্তু ৬টি গেটের ৪টি গেটের অধিকাংশ পাটা ভেঙ্গে বা অকেজো হয়ে যাওয়ায় ভাঙ্গা গেট দিয়ে হু হু করে লবণ পানি উপরে প্রবেশ করে কৃষকের হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হওয়ার আশংকা রয়েছে।

স্থানীয় রবিউল ইসলাম রানা নামের এক কৃষক বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, ৬টি গেটের ৪টি গেটের পাটা ভেঙ্গে যাওয়ায় গেট দিয়ে হু হু করে বানের শ্রোতের মত লবণ পানি প্রবেশ করছে। এভাবে লবণ পানি প্রবেশ করলে কৃষকের ফসল বাঁচানো সম্বব হবে না।


লখপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক এসডি সেলিম রেজা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তপন দেবনাথ ভজন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে ৬গেটের ৪টি গেটের পাটা নষ্ট হয়ে রয়েছে। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের নজরে আসছে না। অতিদ্রুত গেট গুলির পাটা মেরামতের জোর দাবী জানান তাঁরা।


অপর দিকে যুগীখালী নদীর উপর খাজুরা জাহাজঘাটা নামক স্থানে ১০ গেট অবস্থিত। এই যুগীখালী নদীর উপরী অংশে পিলজংগ, মানসা-বাহিরদিয়া ও ফকিরহাট সদর ইউনিয়ন অবস্থিত। এই ইউনিয়ন গুলির অধিকাংশ পানি সরবরাহ হয় যুগীখালী নদীর খাজুরা জাহাজঘাটার এই ১০ গেট দিয়ে। সেই সুবাদে প্রবাহমান নদীর দুইপাড়ে অর্ধশতাধিক বিলে কয়েক হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছেন স্থানীয় কৃষকরা। যাদের অধিকাংশ কৃষক এই নদীর পানি দিয়ে তাদের জমিতে ফসল উৎপাদন করে থাকেন।

স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন, নদীতে বর্তমানে যে পানি রয়েছে তা দিয়েই ফসল উঠানো সম্বব। তাঁরা বলেছেন, এই মুহুর্তে যদি উক্ত গেটের লবণ পানি উঠে তাহলে ক্ষেতের সব ফসল নষ্ট হয়ে তারা পথে বসার উপক্রম হবেন।


লখপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও খাজুরা ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শেখ আহম্মদ আলী বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, গত তিন বছর আগে ১০ গেটের বেশ কয়েকটি পাটা নষ্ট হলে বহু আবেদন নিবেদন করার পর পানি উন্নয়ন বোর্ড মেরামত করে দিয়েছিল। তারপর তাঁরা আর কোন খোঁজ খবর নেয়নি। তার দাবী অতিদ্রুত যদি গেটের পাটা গুলি মেরামত না করা হয় তাহলে লবণ পানি উঠে কৃষকের ক্ষেতে রোপনকৃত ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে।


এ বিষয়ে মাসকাটা সাব প্রজেক্ট কমিটির সভাপতি সমরপন কুমার দাশ বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন ৬ গেট মেরামত বা সংস্কার করার জন্য ইতিমধ্যে ৫৯লক্ষ টাকার একটি টেন্ডার হয়েছে।


এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য স্থানীয় কৃষকরা দ্রুত পানি উন্ন্য়ন বোর্ডের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত