কৃষকের মুখে হাসি

মোল্লাহাটে সূর্যমুখীর বাম্পার ফলন

শেখ শাহিনুর ইসলাম শাহিন,মোল্লাহাট

আপডেট : ১২:৪১ পিএম, সোমবার, ১৫ মার্চ ২০২১ | ৬৪৪

মোল্লাহাটে সূর্যমুখীর বাম্পার ফলন

বাগেরহাটের মোল্লাহাটে সূর্যমুখী চাষে ঝুকে পড়েছে কৃষকরা। লাভ জনক হওয়ায় একের পর এক কৃষি জমিতে ফলানো হচ্ছে সূর্যমূখী। এ বছর মোল্লাহাটে সূর্যমুখী উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।


মোল্লাহাটের মধুমতি নদীর কোল ঘেষে উত্তর দক্ষিণ পূর্ব যেদিকে চোঁখ যায় সেখানে মাঠের পর মাঠে সূর্যমুখী যেন হাসছে। বিশাল আকারের এই হলুদ সূর্যমুখী যে কারো নজর কাড়ে। সূর্যমুখীর দোলা দেখে থমকে যায় পথচারী।


কয়েক বছর ধরে মোল্লাহাটে সূর্যমুখীর চাষ হলেও এবছর ৪০ হেক্টর জমিতে বানিজ্যিক ভাবে সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে। হাইব্রীড হাইসান-৩৩ ও ডিজেএস -২৭৫ এ দুই জাতের সূর্যমূখী ব্যাপক ফলেছে। ফলন ভাল হওয়ায় কৃষকরা ঝুকে পড়েছে সূর্যমুখী চাষে। একের পর এক বাড়ানো হচ্ছে চাষের আয়তন।


এবছর মোল্লাহাট উপজেলার কদমতলা গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলাম ৬০ শতক জমিতে এবং পার্শ¦বর্তী শাসন গ্রামের উন্নতি মহন্ত ৫০ শতক জমিতে সূর্যমুখী চাষ করে। এই দুই কৃষককে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সর্বাত্নক সাহায্য সহযোগিতা করা হচ্ছে। এই দুই চাষী সূর্যমুখী আশার স্বপ্ন দেখিয়েছে। শুধু এই দুই চাষী নয় মোল্লাহাট উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ৩০০ শত জন চাষী সূর্যমুখী নিয়ে স্বপ্ন দেখছে।


চাষীরা জানালেন স্বল্প সময়ে কম খরচে সূর্যমূখী চাষ করা যায়, ফলন ও ভাল। কিন্তু এলাকায় সূর্যমুখী থেকে তেল বের করা মেশিন ও বাজারজাতকরণ করতে না পারায় বাধ্য হয়ে ফড়িয়াদের কাছে সূর্যমুখী বিক্রয় করতে হচ্ছে। চাষীরা স্থানীয়ভাবে সূর্যমুখী ভাঙ্গানোর মিল বসানোর দাবী জানিয়েছেন।


কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, গত বছর মোল্লাহাটে ৮ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ করা হলেও এবছর ৪০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ করা হয়েছে। লাভজনক হওয়ায় চাষীরা সূর্যমুখী চাষে আগ্রহী হচ্ছে। হেক্টর প্রতি ২ মেট্রিক টন সূর্যমুখী চাষ হয়েছে। সূর্যমুখী ডিসেম্বর মাসে চাষ করা হয়েছে এবং মার্চের শেষে কাটা শুরু হয়। হেক্টর প্রতি জমিতে ৪০/৪৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়। খরচ বাদ দিয়েও হেক্টর প্রতি জমিতে কৃষকরা লাভ করবে ৪০ হাজার টাকা। সূর্যমুখী চাষ করতে সব ধরণের সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়েছে বলে কৃষি বিভাগ জানান।


কদমতলা গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলাম বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে আমাকে বিনামূল্যে বীজ ও ট্রেনিং দিয়েছে, এ বছর আমি ৬০ শতক জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করেছি ফলন ও ভাল হয়েছে। আমি চাই আমাদের এলাকার প্রত্যেক কৃষক সূর্যমুখী চাষের সাথে যুক্ত হোক।


শাসন গ্রামের কৃষাণী উন্নতি মহন্ত বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, কৃষি অফিস থেকে আমাকে বিনামূল্যে সূর্যমুখীর বীজ ও সার দিয়েছে । এ বছর আমি ৫০ শতক জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করেছি, ফলন ও ভাল হয়েছে। সূর্যমুখীর তেল স্বাস্থ্য সম্মত তাই আমি চাষ করেছি আপনারাও এ চাষে আগ্রহী হন।


মোল্লাহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আবুল হাসান বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ এবং ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করেছি। গত বছর মোল্লাহাটে ৮ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ হলেও এ বছর মোল্লাহাটে ৪০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ হয়েছে। মোল্লাহাটে হাইব্রীড হাইসান-৩৩ ও ডিজেএস-২৭৫ জাতের সূর্যমুখীর চাষ বেশী হয়েছে এবং ফলনও ভাল হয়েছে। পর্যায়ক্রমে উপজেলার বেশীর ভাগ চাষীকে আমরা সূর্যমুখী চাষে আগ্রহী করতে পারবো। আমরা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে কৃষকদের সকল ধরনের পরামর্শ ও সাহায্য সহযোগিতা করে যাচ্ছি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত