নিঃস্বার্থ মানসিকতায় এনে দিতে পারে মানসিক প্রশান্তি
আপডেট : ০৯:১৪ পিএম, শুক্রবার, ৬ আগস্ট ২০২১ | ৫০০
বর্তমানে মানুষ মানুষকে নিয়েই ভাবছে। ক্রমাগত মানুষের মধ্যে যে পরিবর্তন ঘটছে তাতে মানুষকে নিয়ে বেশি বেশি ভাবাটাই জরুরি হয়ে পড়েছে। আজকাল মানুষ নিজের স্বার্থকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে। কিন্তু তারা বুঝতে পারছে না শুধু মাত্র নিজের স্বার্থ নিয়ে ভালো থাকা যায় না। ভালো থাকতে হলে সবাইকে নিয়েই ভালো থাকতে হয়। কিন্তু এই মানসিকতা না থাকায় মানুষ ক্রমাগতভাবে মনুষত্বহীন জড় পদার্থে পরিণত হচ্ছে। এরই কারনে ভালোকে ভালো, মন্দকে মন্দ বলার মানবিক মূল্যবোধটুকু হারিয়ে ফেলছে। আজ মানুষ সত্যের চেয়ে মিথ্যার আশ্রয় নিরাপদ মনে করছে। এতে মানুষের নিজের ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটছে না বরং মানুষের চিন্তাশক্তি লোপ পাচ্ছে। ধীরে ধীরে মানুষ ভয়ানক স্বার্থপর হয়ে উঠছে।
একজন স্বার্থপর ব্যক্তি সব সময় একাকীত্ব বোধ করে। তখনই সে অন্য একজন ব্যক্তিকে খুজে নেই নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য। তার স্বার্থ মিটে গেলে তার থেকেও বেটার কেউকে খোঁজার চেষ্টা করে, এরপর যখন সে পূর্বের ব্যক্তির থেকেও বেটার কাওকে পেয়ে যায় তখন তাকে অবহেলা করতে শুরু করে, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য মনে করে তাকে দূরে ছুড়ে ফেলে দেয়। একবার ভেবেও দেখে না এই মানুষটা আমার এককীত্ব দূর করার জন্য কত শত চেষ্টা করেছিল। আমার পাশে থেকেছিল। কিছুদিন পর ঐ বেটার পারসনটিই তাকে ছেড়ে চলে যায়। আসলে যাওয়াটাই তো স¦াভাবিক, স্বার্থপর কোন মানুষ কারো বন্ধু হতে পারে না। পরবর্তীতে কোনভাবে তার মধ্যে অনুসূচনাবোধ জেগে ওঠে তবে আবারো সেই পুর্বের ব্যক্তির কাছে ফিরে আসার চেষ্টা করে, হয়তো সেই ব্যক্তিটি বোকা তাই কখনো কখনো সফলও হয় ঐসব স্বার্থপর ব্যক্তি, কিন্তু তার মধ্যে তখনও স্বার্থপরতার স্বভাবটা থেকেই যায়। কারন এরা সবসময় নিজের স্বার্থের কথাই ভাবে। এ ধরনের স্বার্থপরেরা কখনোই অন্যকে বিশ্বাস করতেই চায় না, সব সময় সন্দেহের চোখে দেখে। এদেরকে বাহ্যিকভাবে অনেক আকর্ষণীয় মনে হয় কিন্তু এদের আচরণ থাকে প্রতারণামূলক। স্বার্থপর কোন ব্যক্তির সম্পর্ক চির স্থায়ী হয় না। কারন এরা সম্পর্ক স্থাপন করতে এক সেকেন্ডও ভাবে না আর সম্পর্ক ছিন্ন করতেও এক সেকেন্ডও ভাবে না।
কিছু মানুষ তো এতোটাই স্বার্থপর হয় যে প্রয়োজন মিটে গেলে অন্যকে ছুড়ে ফেলে দিতে এক মুহুর্ত ভাবে না, কখনো কখনো তো এরা তাদের শত্রু বলেও গন্য করে। আসলে এদের স্বভাব কেনোদিনই পাল্টাবে না, এদের মধ্যে কখনোই কৃতজ্ঞতা বোধ জাগ্রত হবে না। এদের যতই ভালোবাসো এরা স্বার্থপরই থেকে যাবে। কিন্তু ঐসব ব্যক্তি যদি একটা বার চিন্তা করে স্বার্থপর আচরনের পরিবর্তে আমি যদি নিঃস্বার্থ আচরণ করি তবে আমিই সমাজের সবচেয়ে বেশী মর্যাদাবান ব্যক্তি হতে পারি, মানুষের প্রিয় পাত্র হয়ে উঠতে পারি, পেতে পারি মানুষের ভালোবাসা ও আশির্বাদ।
অনেক সময় আমরা মানুষেরা চাইলেও নিঃস্বার্থ হতে পারিনা। স্বার্থের চিন্তা করি, বেশী আরো বেশী পাওয়ার লোভ আমাদের রাতের ঘুমটাকেও ঠিকমত হতে দেয়না। আমাদের মনে এক নিদারুণ যন্ত্রণা হতে থাকে। স্বার্থের কারণে প্রতিনিয়ত আমাদের আত্নীয় ও আত্নীয়তার সম্পর্ক নষ্ট হয়। পরিশেষে এই স্বার্থপরতার কারনে আমাদের একা থেকে যেতে হয়। কিন্তু আমরা কি একবারও ভেবে দেখেছি নিঃস্বার্থ মানসিকতায় এনে দিতে পারে আমাদের মানসিক প্রশান্তি। এই ধরণীর বুকেই নেমে আসতে পারে স্বর্গসুখ।